লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: সোম, ২০০৯-১১-১৬ ০০:৪১)
আহমদ ছফা (জুন ৩০, ১৯৪৩- জুলাই ২৮, ২০০১)
১ পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ– আহমদ ছফা (উত্থানপর্ব, একুশে বইমেলা ২০০৫)
২ যদ্যপি আমার গুরু – আহমদ ছফা (মাওলা ব্রাদার্স , মে ২০০০) [পৃষ্ঠা ২২]
৩ আমার কথা ও অন্যান্য প্রবন্ধ – আহমদ ছফা (উত্তরণ , জুলাই ২০০২) [পৃষ্ঠা ৩৯]
৪ আহমদ ছফার প্রবন্ধ – (ষ্টুডেণ্ট ওয়েজ , জানুয়ারী ২০০০) [পৃষ্ঠা ৬৯]
৫ যদ্যপি আমার গুরু – আহমদ ছফা (মাওলা ব্রাদার্স , মে ২০০০) [পৃষ্ঠা ২৭]
৬ [পৃষ্ঠা ২৭] ৭ [পৃষ্ঠা ২৮] ৮ [পৃষ্ঠা ৩২] ৯ [পৃষ্ঠা ৪৩-৪৪] ১০ [পৃষ্ঠা ৪৭] ১১ [পৃষ্ঠা ৪৮] ১২ [পৃষ্ঠা ৫৩] ১৩ [পৃষ্ঠা ৬০] ১৪ [পৃষ্ঠা ৮৪]
১৫ [পৃষ্ঠা ৮৫] ১৬ [পৃষ্ঠা ৮৬] ১৭ [পৃষ্ঠা ৯৫] ১৮ [পৃষ্ঠা ১০৮]
১৯ [পৃষ্ঠা ১০৯-১১০]
ভালো না লাগলে কোন একটা পড়া বই ধরি। কারণে অকারণে একটা বই অনেক কয়বার পড়েছি। আহমদ ছফার পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ। মার্কিন মুলুকে আসার সময় সেই বইটাই আনতে ভুলে গেছি। কিছুদিন আগে আমার মা বইটা কুরিয়ারে পাঠিয়েছেন। থেকে থেকে বইটা হাতে নিয়ে দেখছি। উত্থানপর্ব১ থেকে প্রকাশিত সংস্করণ।
মুখবন্ধ লিখেছেন সলিমুল্লাহ খান । উনি আমার সরাসরি গুরু। কাকে (CAAC) নানান কোর্সে আমি তাঁর ছাত্র হিসাবে ছিলাম। দর্শন কি বাইরের সাহিত্যের অনেক সোনার খনি স্যার আমাকে চিনিয়েছেন। উনার যেকোন লেখার আমি মুগ্ধ পাঠক। এই গৌরচন্দ্রিকা এক কথায় অসাধারণ। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমাদের জাতির যে কয়জন খাঁটি লোক আছেন আমরা তাঁদের আস্তে আস্তে মরে যেতে দেই। জীবদ্দশায় যেটুকু সম্মান কিংবা স্বস্তির দরকার ছিল আমরা তা দিতে পারি না। স্থিতু হতে দেয়া দরকার ছিল আহমদ ছফাকে। যদ্যপি আমার গুরু ছফার আরেকটা মাস্টারপিস। রাজ্জাক স্যারের কপাল - এমন সাগরেদ তিনি পেয়েছিলেন। স্মৃতিচারণ কতোটা অন্তরঙ্গ আর বুদ্ধিদীপ্ত হতে পারে ছফার এই বই না পড়লে বোঝা যাবে না।হরেক কিসিমের বইয়ের নাম লিখেছেন সেখানে ছফা, যেগুলো নিয়ে রাজ্জাক স্যারের সাথে তাঁর বাতচিৎ হয়েছিল। কখনো বিশদে , কখনোবা স্রেফ বইয়ের নাম উল্লেখ করেছেন মাত্র। ওখান থেকে সব কয়টা বইয়ের নাম আমি টুকে নিয়েছিলাম। রাজ্জাক- ছফার মনীষার কান্তি বুঝতে গেলে বইগুলোর নাম নেয়া জরুরী। অনেক কয়টা বই – থমাস হবসেরলেভিয়াথান, জসীমউদ্দীনের জীবনকথা, রামমোহন রায়ের গৌড়ীয় বাংলা ব্যাকরণ, বি বি মিশ্রের ইন্ডিয়ান মিডল ক্লাসেস, উইলিয়াম হান্টারের এনালস অব রুরাল বেঙ্গল, লেনিনের ইকোনমিক হিষ্টরি অব রাশিয়া, ট্রটস্কির থিয়োরি অব পার্মানেন্ট রেভ্যুলেশন, অবন ঠাকুরের বাংলার ব্রত, লেনিনের রেনিগেড কাউটস্কি, রওনক জাহানের পাকিস্তানঃ ফেলিউর অব ন্যাশনাল ইন্ট্রিগ্রেশন, গ্যোতের ফাউস্ট, ডিক উইলসনের এশিয়া এওয়েকস, গুনার মিরডালের এশিয়ান ড্রামা, টয়েনবির ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুল্যুশন, এঙ্গেলসের কনডিশন অব দা ওয়ার্কিং ক্লাস ইন ইংল্যান্ড, পোলার্ডের ফ্যাক্টরস ইন মর্ডান হিস্ট্রি, এডাম স্মিথের দা ওয়েলথ অব ন্যাশনস, রিকার্ডোর প্রিন্সিপালস অব পলি্টিক্যাল একোনমি এন্ড টেক্সেশান, মার্কসের ক্যাপিটাল এক দুই তিন, ম্যাকসভেবরের প্রোটেস্টান্ট এথিকস এন্ড স্পিরিট অব দা ক্যাপিটালিজম এবং রিলিজিয়ানস অব ইন্ডিয়া, হ্যারল্ড লাস্কির লিবারালিজম এন্ড দা রাইজ অব ইউরোপিয়ান ক্যাপিটালিজম, কমরেড আবদুল হকের পূর্ববাংলা আধা সামন্ততান্ত্রিক, আধা ঔপনিবেশিক, নরেন্দ্রনাথের দা হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল মিউজিক, গীবনের ডেক্লাইন এন্ড ফল অব দা রোমান এম্পায়ার, স্যামুয়েল জনসনের লাইভস অব দা ইংলিশ পোয়েটস, খন্দকার ফজলে রাব্বির দা ওরিজিন অব দা বেঙ্গলি মুসলমানস, সালমান রুশদির মিডনাইট চিলড্রেনস, হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা অভিধান, সমর সেনের বাবু বৃত্তান্ত, অমলেশ ত্রিপাঠির ভারতের জাতীয় কংগ্রেস পার্টির ইতিহাস, মওলানা আবুল কালাম আজাদের তরজুমানুল কোরান, যদুনাথ সরকারের হিস্ট্রি অভ আওরঙ্গজেব, স্ট্যানলি উলপার্টের জিন্নাহ অব পাকিস্তান, রামকৃষ্ণের কথামৃত, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর রচনাসমগ্র, লর্ড রীডিংয়ের বায়োগ্রাফি, হিনরি কিসিঞ্জারের ইউ এস ফরেন পলিসি এন্ড দা নিউক্লিয়ার স্টক পাইলস এবং হোয়াইট হাউজ ইয়ার্স, টলস্টয়ের ওয়র এন্ড পীস, ক্ষীতিমোহন সেনের ভারতবর্ষের হিন্দু মুসলমান যুক্ত সাধনা। আমি এখানে অনেকটা ইনডেকস কার্ডের মতো সব নাম আর সাথে সাথে ইন্টারনেটে পাওয়া কিছু বইয়ের সূত্র দিলাম মাত্র। এগুলোর বেশিরভাগ গুগলবুক না হলে গুটেনবার্গের এইচটিএমএল। বলা প্রয়োজন, সলিম স্যার গুরুর চণ্ডাল ভাব অথবা অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক শীষর্ক লেখায় তাঁদের নিষ্কাম জ্ঞানচর্চার তথ্য তালাশ হাজির করেছেন।
নীলক্ষেত চষে চষে ওই লিস্টের অনেক কয়টা বই জোগাড় ও করেছিলাম।ততদিনে নেটে বই নামানোর মজা পেয়ে গেছি। তবে হাতে নিয়ে বই পড়ার ব্যাপারই আলাদা। সুযোগ পেলেই নীলক্ষেতে ঢুঁ মেরে আসতাম। এক চিপায় পেয়ে গেছিলাম হবসের সেই বিখ্যাত লেভিয়াথান। … তিনটা শব্দ ‘ন্যাস্টি’, ‘ব্রুটিস’ এবং ‘শর্ট’ যেভাবে যে অর্থে ব্যবহার করেছেন, তার বদলে বেবাক ডিকশনারি খুঁইজ্যাও আপনে কোন শব্দ পাইবেন না২… ওই বইয়ের ফ্ল্যাপে ও দেখি ‘ন্যাস্টি’, ‘ব্রুটিস’ এবং ‘শর্ট’ নিয়ে কথা আছে। মজাই লাগলো দেখে। পরে বুঝেছি শব্দত্রয় হবজিয়ান হয়ে গেছে। সমর সেনের বাবু বৃত্তান্ত , জসীমউদ্দীনের জীবনকথা, সালমান রুশদির মিডনাইট চিলড্রেনস, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর রচনাসমগ্র, অবন ঠাকুরের বাংলার ব্রত, লেনিনের রেনিগেড কাউটস্কি - যদ্যপি আমার গুরু হাতে না পেলে অতো তাড়াতাড়ি পড়া হতো না। বাবু বৃত্তান্ত আর জীবনকথা বই দুটি পড়লে বোঝা যায় আমার মায়ের ভাষা কতো স্বাদু। স্মৃতিচারণে ছফার জুড়ি নাই। কবি জসীমউদ্দীনকে নিয়ে ছোট্ট কিন্তু অসাধারণ একটা স্মৃতিচারণ লিখেছিলেন ছফা। মাত্র সাড়ে চার পৃষ্ঠার। সেখান থেকে শেষ প্যারাটা লিখি … আমি যখন কবির বাড়িতে হাজির হলাম তখন দুপুরবেলা। আকাশে প্রচণ্ড রোদ। কবি সাহেব তাঁর এক নাতিকে নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমার দু’টো পা ধুলোতে ভরে গেছে। কবি সাহেব আ-হা-হা করে উঠলেন, ‘তুমি অনেক কষ্ট করে এসেছো, একটু জলপান খাও’। আমার ক্ষুধা ছিল, তৃষ্ণাও ছিলো। জলপান খাওয়ার কথায় দু’টোই জেগে উঠলো। কবি সাহেব নিজে বাড়ির ভেতরে গিয়ে মাত্র দু’টো নাইস বিস্কুট এবং এক গ্লাস পানি দিয়ে বললেন, ‘খেয়ে একটু ঠাণ্ডা হও’। ঠাণ্ডা হবো কি? আমার মাথায় রক্ত বয়ে গেলো। আমার ধারণা ছিলো কবি সাহেব চিড়া দেবেন, দই দেবেন, তাতে নারিকেল থাকবে এবং অন্তত দু’টো পাকা কলা নির্ঘাত পাওয়া যাবে। জলপানের আকার-প্রকার দেখে আমার ইচ্ছা হলো গ্লাসটা ছুঁড়ে ফেলে দেই। কিন্তু পারলাম না। যে ফুটফুটে বাচ্চাটি বিস্কুট দু’টো ছোট হাত দিয়ে আমার দিকে বাড়িয়ে ধরেছে তাকে কষ্ট দিতে পারলাম না, সুতরাং কবির আনা জলপান ভক্ষণ করলাম।শরীরের রাগটি তখনো নামেনি। কিছু একটা করা প্রয়োজন।কবি সাহেবকে তো আর তাঁর বাড়িতে গালমন্দ করা যায় না? আমি তাঁর দিকে না তাকিয়ে বাগানে ঢুকে বললাম, ‘কবি সাহেব, জলপান তো করলাম এখন আপনার বাগান থেকে কিছু ফুল নেই’। তিনি ফুল নেয়ার কথা শুনে আমার দিকে বড়ো বড়ো চোখ পাকিয়ে বললেন, ‘আমরা ফুলকে পূজা করি, ছিঁড়িনে’। আমি বললাম, ‘কবি সাহেব, ফুলের ব্যাপারে আমার একটা আলাদা থিওরি আছে। আমরা গাছ লাগাই, জল দেই, সার দেই, ফুলের বাবার সাধ্য নেই যে না ফুটে’। এ কথা বলে আমি একটা একটা করে বাগানের সব ক’টা ফুল ছিঁড়ে চাদরে ভরে নিয়েছিলাম। কবি সাহেব অবাক-বিহবল দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। কোনো কথা বললেন না। আমি যখন ফুল নিয়ে চলে আসছি, তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখি সারা চোখ পানিতে ভরে গেছে। আরো একটা নতুন পরিচয় পেলাম। ইনি হলেন কবি জসীমউদ্দীন। ফুলের শোকে যিনি শিশুর মতো কাঁদতে পারেন। তাঁর কাব্য লোকে ভালোবাসবে না কেনো?৩ … ছফার মাপে প্রবন্ধ লেখার দ্বিতীয় লোক বাংলা সাহিত্যে আর দেখি নাই। তুলনা হিসাবে তাঁর দুটি প্রবন্ধের নাম নিব। প্রথমটি বাঙালী মুসলমানের মন। দ্বিতীয়টি বাংলার চিত্র ঐতিহ্যঃ সুলতানের সাধনা ( এই প্রবন্ধ শুরুর বাক্যটি বোধ করি, আমার সীমিত জ্ঞানে, বাংলা প্রবন্ধের দীর্ঘতম বাক্য … শেখ মোহাম্মদ (এস.এম.) সুলতানের আঁকা গুরুভার নিতম্ব বিশিষ্টা পীনস্তনী এসকল চমৎকার স্বাস্থ্যবতী কর্মিষ্ঠা লীলাচঞ্চলা নারী, স্পর্ধিত অথচ নমনীয় সর্বক্ষণ সৃজনলীলায় মত্ত, অহল্যা পৃথিবীর প্রাণ জাগানিয়া এসকল সুন্দর সূর্যোদয়, সুন্দর সূর্যাস্ত, রাজহাঁসের পাখনার মতো নরোম তুলতুলে এসকল শুভ্র শান্ত ভোর, হিঙুল বরণ মেঘ-মেঘালীর অজস্র সম্ভার, প্রসারিত উদার আকাশ, অবারিত মাঠ গগন ললাট, তালতমাল বৃক্ষরাজির সারি, দীঘল বাঁকের নদীতীরের এসকল দৃষ্টি, শোভন চর, মাঠের পর মাঠে থরে থরে ঢেউ খেলানো সোনার ধান, কলাপাতার ফাঁকে ফাঁকে জোনাকজ্বলা এমন মোহিনী অন্ধকার, আঁকাবাঁকা মেঠো পথের বাঁকে বাঁশ-কাঠে গড়া কিষাণের এসকল সরল আটচালা, এসকল আহ্লাদী বাছুর এবং পরিণত বয়স্ক গবাদি পশু, সর্বোপরি গোটা জনপদের জনজীবনে প্রসারিত উৎপাদন শৃঙ্খলে আবদ্ধ সভ্যতার অভিযাত্রী অজেয় মানুষ; তারা যেনো দৈনন্দিন জীবনধারণের স্রোতে কেলিকলারসে যুগ থেকে যুগান্তর পেরিয়ে অনন্তের পথে ভেসে যাচ্ছে, ক্যানভাসে তাদের প্রত্যয়দোপ্ত বলিষ্ঠ উপস্থিতি, স্বচ্ছন্দ ঋজু গতিভঙ্গিমা এমনভাবে বাঁধা পড়েছে, মনে হবে সমস্ত নিসর্গ দৃশ্য ছাপিয়ে মেঘেতে ঠেকেছে তাদের মস্তক এবং পাতালে প্রবিষ্ট হয়েছে মূল, তাদের শ্রম-ঘামের ঝঙ্কার, চেষ্টার সঙ্গীত সমস্ত প্রাকৃতিক কোলাহল ভেদ করে আকাশ গঙ্গার কিনারে কিনারে ছলাৎ ছলাৎ ধবনিতে একসঙ্গে ফেটে পড়েছে৪ …)
… এ জ্যু’স ব্লাড ইজ অলসো রেড। এখানেই শেকসপীয়ারের আসল প্রতিভা ফুইট্যা বাইর অইছে … বেবাক মধ্যযুগ তালাশ কইরা দেখলেও এইরকম বিদ্যুতের মতন ঝলক-দেওয়া একটা লাইন আপনে খুঁইজ্যা পাইবেন না৫ … যদ্যপি আমার গুরু বইয়ে আহমদ ছফা আমাদের সামনে অনেক কয়টা বিদ্যুতের মতন ঝলক-দেওয়া কথা হাজির করেছেন। কিছু কথা ছফার বয়ানে, কিছু গুরু রাজ্জাক সাহেবের বয়ানে … আধুনিক বাংলা গদ্যের বিকাশই অইল নাইন্টিনথ সেঞ্চুরির সবচাইতে মূল্যবান অবদান৬ … লেনিন বার্নার্ড শ সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, এ গুড ম্যান এমাং দা ফেবিয়ানস। রাজ্জাক সাহেবের অবস্থাও অনেকটা সেরকম৭ … মেহন্নতি মানুষের ওপর যে জাগ্রত সহানুভূতি আমার মনে অইছে এইডাই সমাজতন্ত্রের সবচাইতে বড় কন্ট্রিবিউশন৮ … টয়েনবির বইটা পাঠ করার পর আমার মনে হলো গতকালের আমি-র সঙ্গে আজকের আমি-র অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে। একেকটা বইয়ের চিন্তা-চেতনার ওপর প্রভাব বিস্তার করার কী অপরিসীম ক্ষমতা!৯ … ইন্ডিয়ার অন্যান্য প্রোভিন্সে যেটুকু ফিউডালিজমের চিহ্ন খুঁইজ্যা পাওন যায়, বেঙ্গলে তার ছিটাফোঁটাও পাইবেন না১০ … চাঁদ সওদাগরের চরিত্রের এই যে ঋজুতা এইডা অইল সমুদ্র-বাণিজ্যশক্তির প্রতীক১১ ... প্যালেস্টাইনের খ্রিস্টান ধর্ম আর রোমের খ্রিস্টান ধর্ম এক জিনিস নয়১২ … কবি লেখকরা যা বলে সেরকম আচরণ না করলেও চলে। হের লাইগ্যা প্লেটো তার রিপাবলিক থ্যাইক্যা কবিগো নির্বাসনে পাঠাইবার কথা বলছিল১৩ … দেশ মানে ত দেশের মানুষ। মানুষই অইল গিয়া দেশের আসল শক্তি।মানুষগোরে আপনেরা ডেড ওয়েট কইরা রাইখ্যা থুইছেন১৪ … মানুষের বিশ্বাস এবং সংস্কার এগুলো বেশি বয়েসে নতুন করে জেগে ওঠে১৫ … দেয়ার আর পিরিয়ডস ইন হিস্টোরি হোয়েন ক্রলিং ইজ দা বেস্ট মীনস অব কম্যুনিকেশন। এই হামাগুড়ি দেওনের পাল্লায় ইন্টেলেকচুয়ালের সকলের আগে থাকে১৬… সেক্যুলারাইজেশন ইফেক্ট অব ইসলাম অন ইন্ডিয়া ওয়াজ রিয়ালি ইনারমাস। এই কথা এখন অনেকে মাইন্যা নিবার চান না১৭ … প্রফেসর রাজ্জাকের চরিত্রের প্রণিধানযোগ্য বৈশিষ্ট্যটি আমি সবসময়ে সশ্রদ্ধ বিস্ময়ে লক্ষ করে আসছি, সেটি হল তাঁর নিজের দেশ, সমাজের প্রতি নিঃশর্ত অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকারবোধই প্রফেসর রাজ্জাককে অন্য সকলের চাইতে আলাদা করেছে। ইংরেজিতে যাকে ইনটিগ্রিটি বলা হয়, বাংলায় আমি এ মুহূর্তে তার কোন সঠিক প্রতিশব্দ খুঁজে পাচ্ছিনে। সবদিক মিলিয়ে এক ধাতুতে তৈরি করা ব্লকের মতো ইনটিগ্রিটিসম্পন্ন মানুষ বাঙালি মুসলমানসমাজে একজনও দেখিনি১৮ … রাজ্জাক সাহেব মনেপ্রাণে একজন খাঁটি সেক্যুলার মানুষ। কিন্তু বাঙালি মুসলমানসমাজের সেক্যুলারিজমের বিকাশের প্রক্রিয়াটি সমাজের ভেতর থেকে, বাঙালি মুসলমানের সামাজিক অভিজ্ঞতার স্তর থেকে বিকশিত করে তুলতে হবে, একথা তিনি মনে করেন১৯ …
এতোটুকু লিখে নেয়ার পর আমি সচলে সার্চ দিয়ে দেখলাম আহমদ ছফার উপর সচলদের লেখা কি কি? নুরুজ্জামান মানিকের বেশ কিছু লেখা পেলাম। ভালো লেখা। ছফাকে নিয়ে যাঁরা লেখেন তাঁদের অধিকাংশের ছফার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল। আমার সাথে ছফার সাক্ষাতে মোলাকাত হয় নাই। অথচ তাঁর গ্রামের বাড়ি আমার বাড়ির কাছেই। তাঁকে আমি চিনি কেবল তাঁর লেখার মাধ্যমে। আমার কাছে সেটাই কাফি। ছফাগিরি এখন একটা দর্শনে পরিণত হয়েছে । বামনের দেশে অতো শক্ত শিরদাঁড়ার লোক আমরা আর কই পাবো ? মাহবুব লীলেনের কথাটা আমার পছন্দ হয়েছে … সান অব দ্য সয়েল হিসেবে মাত্র যে কয়জন মানুষকে চিহ্নিত করা যায় তার মধ্যে সম্ভবত প্রথম সারির হচ্ছেন প্রফেসর রাজ্জাক যিনি আগাগোড়া বাঙাল।আমার ধারণা ছফা সাহিত্য নয়। বাঙালকে চিহ্নিত (আইকনোগ্রাফ) করার চিন্তা করতেন স্বতন্ত্র বাঙাল হিসেবেই এবং এর জন্য তিনি নিজে একটা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিলেন। আর সেই কাজকর্মের ফাঁকে ফাঁকে তিনি লিখতেন সাহিত্য যেগুলো একেবারেই তার একেবারেই বাঙাল … সলিমুল্লাহ খান গুরুর চণ্ডাল ভাব অথবা অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক শীষর্ক লেখায় রাজ্জাক সাহেবের চরিত্র পরিষ্কার করেছেন (অন্তত আমার কাছে পরিষ্কার হয়েছে) … তিনি একদিন মনে করিয়াছিলেন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পাইলে বাংলার মুসলমান সমাজের উপকার হইবে। এখন পাকিস্তান গিয়াছে, বাংলাদেশ আজও টিকিয়া আছে। রাজ্জাক সাহেব এই দুই যুগ, দুই সময় পার করিয়াছেন কিন্তু এক সমাজই রহিয়া গিয়াছে। অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাককে আহমদ ছফা বাঙালি মুসলমান সমাজের সবচেয়ে সুন্দর প্রতিনিধি বলিয়া রায় দিয়াছেন। এই সুন্দর শব্দটার ইংরেজি অনুবাদ দাঁড়ায় সেকুলার বা সোজা মানুষ। ধর্ম বলিতে এয়ুরোপে যে বাঁকা বাঁকা চাকা বোঝাইত সেকুলার বা দুনিয়াদারি তাহার তুলনায় সোজাসাপ্টা।ঢাকায় যে নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণী এখন রাজত্ব করিতেছেন জাতীয় পরিচয়ে তাঁহারা বাঙালি মুসলমান। সেকুলার বাঙালি মুসলমান কথাটা কাঁহারও পছন্দ না হইলে বলিতে পারেন চাঁড়াল মুসলমান। অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক নিঃসন্দেহে এই মুসলমান ও বাঙালি চণ্ডালদের গুরু।…
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীকে পূর্ববাংলার মুসলিম বলে সম্বোধনকারী আহমদ ছফা কিংবা মেজর ডালিমের পরিবারের সাথে সম্পর্কিত আবদুর রাজ্জাক- এসব দিয়ে তাঁদের বিচার করা অতি সরলীকরণ। আমার সহজ বুদ্ধি তাই বলে।
সূত্রমুখবন্ধ লিখেছেন সলিমুল্লাহ খান । উনি আমার সরাসরি গুরু। কাকে (CAAC) নানান কোর্সে আমি তাঁর ছাত্র হিসাবে ছিলাম। দর্শন কি বাইরের সাহিত্যের অনেক সোনার খনি স্যার আমাকে চিনিয়েছেন। উনার যেকোন লেখার আমি মুগ্ধ পাঠক। এই গৌরচন্দ্রিকা এক কথায় অসাধারণ। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমাদের জাতির যে কয়জন খাঁটি লোক আছেন আমরা তাঁদের আস্তে আস্তে মরে যেতে দেই। জীবদ্দশায় যেটুকু সম্মান কিংবা স্বস্তির দরকার ছিল আমরা তা দিতে পারি না। স্থিতু হতে দেয়া দরকার ছিল আহমদ ছফাকে। যদ্যপি আমার গুরু ছফার আরেকটা মাস্টারপিস। রাজ্জাক স্যারের কপাল - এমন সাগরেদ তিনি পেয়েছিলেন। স্মৃতিচারণ কতোটা অন্তরঙ্গ আর বুদ্ধিদীপ্ত হতে পারে ছফার এই বই না পড়লে বোঝা যাবে না।হরেক কিসিমের বইয়ের নাম লিখেছেন সেখানে ছফা, যেগুলো নিয়ে রাজ্জাক স্যারের সাথে তাঁর বাতচিৎ হয়েছিল। কখনো বিশদে , কখনোবা স্রেফ বইয়ের নাম উল্লেখ করেছেন মাত্র। ওখান থেকে সব কয়টা বইয়ের নাম আমি টুকে নিয়েছিলাম। রাজ্জাক- ছফার মনীষার কান্তি বুঝতে গেলে বইগুলোর নাম নেয়া জরুরী। অনেক কয়টা বই – থমাস হবসেরলেভিয়াথান, জসীমউদ্দীনের জীবনকথা, রামমোহন রায়ের গৌড়ীয় বাংলা ব্যাকরণ, বি বি মিশ্রের ইন্ডিয়ান মিডল ক্লাসেস, উইলিয়াম হান্টারের এনালস অব রুরাল বেঙ্গল, লেনিনের ইকোনমিক হিষ্টরি অব রাশিয়া, ট্রটস্কির থিয়োরি অব পার্মানেন্ট রেভ্যুলেশন, অবন ঠাকুরের বাংলার ব্রত, লেনিনের রেনিগেড কাউটস্কি, রওনক জাহানের পাকিস্তানঃ ফেলিউর অব ন্যাশনাল ইন্ট্রিগ্রেশন, গ্যোতের ফাউস্ট, ডিক উইলসনের এশিয়া এওয়েকস, গুনার মিরডালের এশিয়ান ড্রামা, টয়েনবির ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুল্যুশন, এঙ্গেলসের কনডিশন অব দা ওয়ার্কিং ক্লাস ইন ইংল্যান্ড, পোলার্ডের ফ্যাক্টরস ইন মর্ডান হিস্ট্রি, এডাম স্মিথের দা ওয়েলথ অব ন্যাশনস, রিকার্ডোর প্রিন্সিপালস অব পলি্টিক্যাল একোনমি এন্ড টেক্সেশান, মার্কসের ক্যাপিটাল এক দুই তিন, ম্যাকসভেবরের প্রোটেস্টান্ট এথিকস এন্ড স্পিরিট অব দা ক্যাপিটালিজম এবং রিলিজিয়ানস অব ইন্ডিয়া, হ্যারল্ড লাস্কির লিবারালিজম এন্ড দা রাইজ অব ইউরোপিয়ান ক্যাপিটালিজম, কমরেড আবদুল হকের পূর্ববাংলা আধা সামন্ততান্ত্রিক, আধা ঔপনিবেশিক, নরেন্দ্রনাথের দা হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল মিউজিক, গীবনের ডেক্লাইন এন্ড ফল অব দা রোমান এম্পায়ার, স্যামুয়েল জনসনের লাইভস অব দা ইংলিশ পোয়েটস, খন্দকার ফজলে রাব্বির দা ওরিজিন অব দা বেঙ্গলি মুসলমানস, সালমান রুশদির মিডনাইট চিলড্রেনস, হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা অভিধান, সমর সেনের বাবু বৃত্তান্ত, অমলেশ ত্রিপাঠির ভারতের জাতীয় কংগ্রেস পার্টির ইতিহাস, মওলানা আবুল কালাম আজাদের তরজুমানুল কোরান, যদুনাথ সরকারের হিস্ট্রি অভ আওরঙ্গজেব, স্ট্যানলি উলপার্টের জিন্নাহ অব পাকিস্তান, রামকৃষ্ণের কথামৃত, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর রচনাসমগ্র, লর্ড রীডিংয়ের বায়োগ্রাফি, হিনরি কিসিঞ্জারের ইউ এস ফরেন পলিসি এন্ড দা নিউক্লিয়ার স্টক পাইলস এবং হোয়াইট হাউজ ইয়ার্স, টলস্টয়ের ওয়র এন্ড পীস, ক্ষীতিমোহন সেনের ভারতবর্ষের হিন্দু মুসলমান যুক্ত সাধনা। আমি এখানে অনেকটা ইনডেকস কার্ডের মতো সব নাম আর সাথে সাথে ইন্টারনেটে পাওয়া কিছু বইয়ের সূত্র দিলাম মাত্র। এগুলোর বেশিরভাগ গুগলবুক না হলে গুটেনবার্গের এইচটিএমএল। বলা প্রয়োজন, সলিম স্যার গুরুর চণ্ডাল ভাব অথবা অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক শীষর্ক লেখায় তাঁদের নিষ্কাম জ্ঞানচর্চার তথ্য তালাশ হাজির করেছেন।
নীলক্ষেত চষে চষে ওই লিস্টের অনেক কয়টা বই জোগাড় ও করেছিলাম।ততদিনে নেটে বই নামানোর মজা পেয়ে গেছি। তবে হাতে নিয়ে বই পড়ার ব্যাপারই আলাদা। সুযোগ পেলেই নীলক্ষেতে ঢুঁ মেরে আসতাম। এক চিপায় পেয়ে গেছিলাম হবসের সেই বিখ্যাত লেভিয়াথান। … তিনটা শব্দ ‘ন্যাস্টি’, ‘ব্রুটিস’ এবং ‘শর্ট’ যেভাবে যে অর্থে ব্যবহার করেছেন, তার বদলে বেবাক ডিকশনারি খুঁইজ্যাও আপনে কোন শব্দ পাইবেন না২… ওই বইয়ের ফ্ল্যাপে ও দেখি ‘ন্যাস্টি’, ‘ব্রুটিস’ এবং ‘শর্ট’ নিয়ে কথা আছে। মজাই লাগলো দেখে। পরে বুঝেছি শব্দত্রয় হবজিয়ান হয়ে গেছে। সমর সেনের বাবু বৃত্তান্ত , জসীমউদ্দীনের জীবনকথা, সালমান রুশদির মিডনাইট চিলড্রেনস, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর রচনাসমগ্র, অবন ঠাকুরের বাংলার ব্রত, লেনিনের রেনিগেড কাউটস্কি - যদ্যপি আমার গুরু হাতে না পেলে অতো তাড়াতাড়ি পড়া হতো না। বাবু বৃত্তান্ত আর জীবনকথা বই দুটি পড়লে বোঝা যায় আমার মায়ের ভাষা কতো স্বাদু। স্মৃতিচারণে ছফার জুড়ি নাই। কবি জসীমউদ্দীনকে নিয়ে ছোট্ট কিন্তু অসাধারণ একটা স্মৃতিচারণ লিখেছিলেন ছফা। মাত্র সাড়ে চার পৃষ্ঠার। সেখান থেকে শেষ প্যারাটা লিখি … আমি যখন কবির বাড়িতে হাজির হলাম তখন দুপুরবেলা। আকাশে প্রচণ্ড রোদ। কবি সাহেব তাঁর এক নাতিকে নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমার দু’টো পা ধুলোতে ভরে গেছে। কবি সাহেব আ-হা-হা করে উঠলেন, ‘তুমি অনেক কষ্ট করে এসেছো, একটু জলপান খাও’। আমার ক্ষুধা ছিল, তৃষ্ণাও ছিলো। জলপান খাওয়ার কথায় দু’টোই জেগে উঠলো। কবি সাহেব নিজে বাড়ির ভেতরে গিয়ে মাত্র দু’টো নাইস বিস্কুট এবং এক গ্লাস পানি দিয়ে বললেন, ‘খেয়ে একটু ঠাণ্ডা হও’। ঠাণ্ডা হবো কি? আমার মাথায় রক্ত বয়ে গেলো। আমার ধারণা ছিলো কবি সাহেব চিড়া দেবেন, দই দেবেন, তাতে নারিকেল থাকবে এবং অন্তত দু’টো পাকা কলা নির্ঘাত পাওয়া যাবে। জলপানের আকার-প্রকার দেখে আমার ইচ্ছা হলো গ্লাসটা ছুঁড়ে ফেলে দেই। কিন্তু পারলাম না। যে ফুটফুটে বাচ্চাটি বিস্কুট দু’টো ছোট হাত দিয়ে আমার দিকে বাড়িয়ে ধরেছে তাকে কষ্ট দিতে পারলাম না, সুতরাং কবির আনা জলপান ভক্ষণ করলাম।শরীরের রাগটি তখনো নামেনি। কিছু একটা করা প্রয়োজন।কবি সাহেবকে তো আর তাঁর বাড়িতে গালমন্দ করা যায় না? আমি তাঁর দিকে না তাকিয়ে বাগানে ঢুকে বললাম, ‘কবি সাহেব, জলপান তো করলাম এখন আপনার বাগান থেকে কিছু ফুল নেই’। তিনি ফুল নেয়ার কথা শুনে আমার দিকে বড়ো বড়ো চোখ পাকিয়ে বললেন, ‘আমরা ফুলকে পূজা করি, ছিঁড়িনে’। আমি বললাম, ‘কবি সাহেব, ফুলের ব্যাপারে আমার একটা আলাদা থিওরি আছে। আমরা গাছ লাগাই, জল দেই, সার দেই, ফুলের বাবার সাধ্য নেই যে না ফুটে’। এ কথা বলে আমি একটা একটা করে বাগানের সব ক’টা ফুল ছিঁড়ে চাদরে ভরে নিয়েছিলাম। কবি সাহেব অবাক-বিহবল দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। কোনো কথা বললেন না। আমি যখন ফুল নিয়ে চলে আসছি, তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখি সারা চোখ পানিতে ভরে গেছে। আরো একটা নতুন পরিচয় পেলাম। ইনি হলেন কবি জসীমউদ্দীন। ফুলের শোকে যিনি শিশুর মতো কাঁদতে পারেন। তাঁর কাব্য লোকে ভালোবাসবে না কেনো?৩ … ছফার মাপে প্রবন্ধ লেখার দ্বিতীয় লোক বাংলা সাহিত্যে আর দেখি নাই। তুলনা হিসাবে তাঁর দুটি প্রবন্ধের নাম নিব। প্রথমটি বাঙালী মুসলমানের মন। দ্বিতীয়টি বাংলার চিত্র ঐতিহ্যঃ সুলতানের সাধনা ( এই প্রবন্ধ শুরুর বাক্যটি বোধ করি, আমার সীমিত জ্ঞানে, বাংলা প্রবন্ধের দীর্ঘতম বাক্য … শেখ মোহাম্মদ (এস.এম.) সুলতানের আঁকা গুরুভার নিতম্ব বিশিষ্টা পীনস্তনী এসকল চমৎকার স্বাস্থ্যবতী কর্মিষ্ঠা লীলাচঞ্চলা নারী, স্পর্ধিত অথচ নমনীয় সর্বক্ষণ সৃজনলীলায় মত্ত, অহল্যা পৃথিবীর প্রাণ জাগানিয়া এসকল সুন্দর সূর্যোদয়, সুন্দর সূর্যাস্ত, রাজহাঁসের পাখনার মতো নরোম তুলতুলে এসকল শুভ্র শান্ত ভোর, হিঙুল বরণ মেঘ-মেঘালীর অজস্র সম্ভার, প্রসারিত উদার আকাশ, অবারিত মাঠ গগন ললাট, তালতমাল বৃক্ষরাজির সারি, দীঘল বাঁকের নদীতীরের এসকল দৃষ্টি, শোভন চর, মাঠের পর মাঠে থরে থরে ঢেউ খেলানো সোনার ধান, কলাপাতার ফাঁকে ফাঁকে জোনাকজ্বলা এমন মোহিনী অন্ধকার, আঁকাবাঁকা মেঠো পথের বাঁকে বাঁশ-কাঠে গড়া কিষাণের এসকল সরল আটচালা, এসকল আহ্লাদী বাছুর এবং পরিণত বয়স্ক গবাদি পশু, সর্বোপরি গোটা জনপদের জনজীবনে প্রসারিত উৎপাদন শৃঙ্খলে আবদ্ধ সভ্যতার অভিযাত্রী অজেয় মানুষ; তারা যেনো দৈনন্দিন জীবনধারণের স্রোতে কেলিকলারসে যুগ থেকে যুগান্তর পেরিয়ে অনন্তের পথে ভেসে যাচ্ছে, ক্যানভাসে তাদের প্রত্যয়দোপ্ত বলিষ্ঠ উপস্থিতি, স্বচ্ছন্দ ঋজু গতিভঙ্গিমা এমনভাবে বাঁধা পড়েছে, মনে হবে সমস্ত নিসর্গ দৃশ্য ছাপিয়ে মেঘেতে ঠেকেছে তাদের মস্তক এবং পাতালে প্রবিষ্ট হয়েছে মূল, তাদের শ্রম-ঘামের ঝঙ্কার, চেষ্টার সঙ্গীত সমস্ত প্রাকৃতিক কোলাহল ভেদ করে আকাশ গঙ্গার কিনারে কিনারে ছলাৎ ছলাৎ ধবনিতে একসঙ্গে ফেটে পড়েছে৪ …)
… এ জ্যু’স ব্লাড ইজ অলসো রেড। এখানেই শেকসপীয়ারের আসল প্রতিভা ফুইট্যা বাইর অইছে … বেবাক মধ্যযুগ তালাশ কইরা দেখলেও এইরকম বিদ্যুতের মতন ঝলক-দেওয়া একটা লাইন আপনে খুঁইজ্যা পাইবেন না৫ … যদ্যপি আমার গুরু বইয়ে আহমদ ছফা আমাদের সামনে অনেক কয়টা বিদ্যুতের মতন ঝলক-দেওয়া কথা হাজির করেছেন। কিছু কথা ছফার বয়ানে, কিছু গুরু রাজ্জাক সাহেবের বয়ানে … আধুনিক বাংলা গদ্যের বিকাশই অইল নাইন্টিনথ সেঞ্চুরির সবচাইতে মূল্যবান অবদান৬ … লেনিন বার্নার্ড শ সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, এ গুড ম্যান এমাং দা ফেবিয়ানস। রাজ্জাক সাহেবের অবস্থাও অনেকটা সেরকম৭ … মেহন্নতি মানুষের ওপর যে জাগ্রত সহানুভূতি আমার মনে অইছে এইডাই সমাজতন্ত্রের সবচাইতে বড় কন্ট্রিবিউশন৮ … টয়েনবির বইটা পাঠ করার পর আমার মনে হলো গতকালের আমি-র সঙ্গে আজকের আমি-র অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে। একেকটা বইয়ের চিন্তা-চেতনার ওপর প্রভাব বিস্তার করার কী অপরিসীম ক্ষমতা!৯ … ইন্ডিয়ার অন্যান্য প্রোভিন্সে যেটুকু ফিউডালিজমের চিহ্ন খুঁইজ্যা পাওন যায়, বেঙ্গলে তার ছিটাফোঁটাও পাইবেন না১০ … চাঁদ সওদাগরের চরিত্রের এই যে ঋজুতা এইডা অইল সমুদ্র-বাণিজ্যশক্তির প্রতীক১১ ... প্যালেস্টাইনের খ্রিস্টান ধর্ম আর রোমের খ্রিস্টান ধর্ম এক জিনিস নয়১২ … কবি লেখকরা যা বলে সেরকম আচরণ না করলেও চলে। হের লাইগ্যা প্লেটো তার রিপাবলিক থ্যাইক্যা কবিগো নির্বাসনে পাঠাইবার কথা বলছিল১৩ … দেশ মানে ত দেশের মানুষ। মানুষই অইল গিয়া দেশের আসল শক্তি।মানুষগোরে আপনেরা ডেড ওয়েট কইরা রাইখ্যা থুইছেন১৪ … মানুষের বিশ্বাস এবং সংস্কার এগুলো বেশি বয়েসে নতুন করে জেগে ওঠে১৫ … দেয়ার আর পিরিয়ডস ইন হিস্টোরি হোয়েন ক্রলিং ইজ দা বেস্ট মীনস অব কম্যুনিকেশন। এই হামাগুড়ি দেওনের পাল্লায় ইন্টেলেকচুয়ালের সকলের আগে থাকে১৬… সেক্যুলারাইজেশন ইফেক্ট অব ইসলাম অন ইন্ডিয়া ওয়াজ রিয়ালি ইনারমাস। এই কথা এখন অনেকে মাইন্যা নিবার চান না১৭ … প্রফেসর রাজ্জাকের চরিত্রের প্রণিধানযোগ্য বৈশিষ্ট্যটি আমি সবসময়ে সশ্রদ্ধ বিস্ময়ে লক্ষ করে আসছি, সেটি হল তাঁর নিজের দেশ, সমাজের প্রতি নিঃশর্ত অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকারবোধই প্রফেসর রাজ্জাককে অন্য সকলের চাইতে আলাদা করেছে। ইংরেজিতে যাকে ইনটিগ্রিটি বলা হয়, বাংলায় আমি এ মুহূর্তে তার কোন সঠিক প্রতিশব্দ খুঁজে পাচ্ছিনে। সবদিক মিলিয়ে এক ধাতুতে তৈরি করা ব্লকের মতো ইনটিগ্রিটিসম্পন্ন মানুষ বাঙালি মুসলমানসমাজে একজনও দেখিনি১৮ … রাজ্জাক সাহেব মনেপ্রাণে একজন খাঁটি সেক্যুলার মানুষ। কিন্তু বাঙালি মুসলমানসমাজের সেক্যুলারিজমের বিকাশের প্রক্রিয়াটি সমাজের ভেতর থেকে, বাঙালি মুসলমানের সামাজিক অভিজ্ঞতার স্তর থেকে বিকশিত করে তুলতে হবে, একথা তিনি মনে করেন১৯ …
এতোটুকু লিখে নেয়ার পর আমি সচলে সার্চ দিয়ে দেখলাম আহমদ ছফার উপর সচলদের লেখা কি কি? নুরুজ্জামান মানিকের বেশ কিছু লেখা পেলাম। ভালো লেখা। ছফাকে নিয়ে যাঁরা লেখেন তাঁদের অধিকাংশের ছফার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল। আমার সাথে ছফার সাক্ষাতে মোলাকাত হয় নাই। অথচ তাঁর গ্রামের বাড়ি আমার বাড়ির কাছেই। তাঁকে আমি চিনি কেবল তাঁর লেখার মাধ্যমে। আমার কাছে সেটাই কাফি। ছফাগিরি এখন একটা দর্শনে পরিণত হয়েছে । বামনের দেশে অতো শক্ত শিরদাঁড়ার লোক আমরা আর কই পাবো ? মাহবুব লীলেনের কথাটা আমার পছন্দ হয়েছে … সান অব দ্য সয়েল হিসেবে মাত্র যে কয়জন মানুষকে চিহ্নিত করা যায় তার মধ্যে সম্ভবত প্রথম সারির হচ্ছেন প্রফেসর রাজ্জাক যিনি আগাগোড়া বাঙাল।আমার ধারণা ছফা সাহিত্য নয়। বাঙালকে চিহ্নিত (আইকনোগ্রাফ) করার চিন্তা করতেন স্বতন্ত্র বাঙাল হিসেবেই এবং এর জন্য তিনি নিজে একটা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিলেন। আর সেই কাজকর্মের ফাঁকে ফাঁকে তিনি লিখতেন সাহিত্য যেগুলো একেবারেই তার একেবারেই বাঙাল … সলিমুল্লাহ খান গুরুর চণ্ডাল ভাব অথবা অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক শীষর্ক লেখায় রাজ্জাক সাহেবের চরিত্র পরিষ্কার করেছেন (অন্তত আমার কাছে পরিষ্কার হয়েছে) … তিনি একদিন মনে করিয়াছিলেন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পাইলে বাংলার মুসলমান সমাজের উপকার হইবে। এখন পাকিস্তান গিয়াছে, বাংলাদেশ আজও টিকিয়া আছে। রাজ্জাক সাহেব এই দুই যুগ, দুই সময় পার করিয়াছেন কিন্তু এক সমাজই রহিয়া গিয়াছে। অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাককে আহমদ ছফা বাঙালি মুসলমান সমাজের সবচেয়ে সুন্দর প্রতিনিধি বলিয়া রায় দিয়াছেন। এই সুন্দর শব্দটার ইংরেজি অনুবাদ দাঁড়ায় সেকুলার বা সোজা মানুষ। ধর্ম বলিতে এয়ুরোপে যে বাঁকা বাঁকা চাকা বোঝাইত সেকুলার বা দুনিয়াদারি তাহার তুলনায় সোজাসাপ্টা।ঢাকায় যে নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণী এখন রাজত্ব করিতেছেন জাতীয় পরিচয়ে তাঁহারা বাঙালি মুসলমান। সেকুলার বাঙালি মুসলমান কথাটা কাঁহারও পছন্দ না হইলে বলিতে পারেন চাঁড়াল মুসলমান। অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক নিঃসন্দেহে এই মুসলমান ও বাঙালি চণ্ডালদের গুরু।…
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীকে পূর্ববাংলার মুসলিম বলে সম্বোধনকারী আহমদ ছফা কিংবা মেজর ডালিমের পরিবারের সাথে সম্পর্কিত আবদুর রাজ্জাক- এসব দিয়ে তাঁদের বিচার করা অতি সরলীকরণ। আমার সহজ বুদ্ধি তাই বলে।
১ পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ– আহমদ ছফা (উত্থানপর্ব, একুশে বইমেলা ২০০৫)
২ যদ্যপি আমার গুরু – আহমদ ছফা (মাওলা ব্রাদার্স , মে ২০০০) [পৃষ্ঠা ২২]
৩ আমার কথা ও অন্যান্য প্রবন্ধ – আহমদ ছফা (উত্তরণ , জুলাই ২০০২) [পৃষ্ঠা ৩৯]
৪ আহমদ ছফার প্রবন্ধ – (ষ্টুডেণ্ট ওয়েজ , জানুয়ারী ২০০০) [পৃষ্ঠা ৬৯]
৫ যদ্যপি আমার গুরু – আহমদ ছফা (মাওলা ব্রাদার্স , মে ২০০০) [পৃষ্ঠা ২৭]
৬ [পৃষ্ঠা ২৭] ৭ [পৃষ্ঠা ২৮] ৮ [পৃষ্ঠা ৩২] ৯ [পৃষ্ঠা ৪৩-৪৪] ১০ [পৃষ্ঠা ৪৭] ১১ [পৃষ্ঠা ৪৮] ১২ [পৃষ্ঠা ৫৩] ১৩ [পৃষ্ঠা ৬০] ১৪ [পৃষ্ঠা ৮৪]
১৫ [পৃষ্ঠা ৮৫] ১৬ [পৃষ্ঠা ৮৬] ১৭ [পৃষ্ঠা ৯৫] ১৮ [পৃষ্ঠা ১০৮]
১৯ [পৃষ্ঠা ১০৯-১১০]
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: সোম, ২০০৯-১১-১৬ ০০:৪১)
উদ্ধৃতি | শুভাশীষ দাশ এর ব্লগ | ৪৬টি মন্তব্য | ১০৫৭বার পঠিত
শেয়ার27
উদ্ধৃতি | শুভাশীষ দাশ এর ব্লগ | ৪৬টি মন্তব্য | ১০৫৭বার পঠিত
শেয়ার27
প্রকাশিত লেখা ও মন্তব্যের দায় একান্তই সংশ্লিষ্ট লেখক বা মন্তব্যকারীর, সচলায়তন কর্তৃপক্ষ এজন্য কোনভাবেই দায়ী নন।
লেখকের এবং মন্তব্যকারীর লেখায় অথবা প্রোফাইলে পরিষ্কারভাবে লাইসেন্স প্রসঙ্গে কোন উল্লেখ না থাকলে স্ব-স্ব লেখার এবং মন্তব্যের সর্বস্বত্ব সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট লেখকের বা মন্তব্যকারী কর্তৃক সংরক্ষিত থাকবে। লেখকের বা মন্তব্যকারীর অনুমতি ব্যতিরেকে লেখার বা মন্তব্যের আংশিক বা পূর্ণ অংশ কোন ধরনের মিডিয়ায় পুনঃপ্রকাশ করা যাবে না।
১
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ছফা ভাইয়ের সব লেখা নিয়ে বলতে গেলে কথা ঠিক মতো আসে না। আপনার রেফারেন্সগুলা অনেক কাজে লাগবে। পাঁচ বছরের পড়ার কাজ দিছেন। পরের কিস্তিগুলো তাড়াতাড়ি দেন ভাই।
২
আপনাকে ও ধন্যবাদ।
৩
যদ্যপি আমার গুরু বইটার একটা নরমকপি পেলাম অনলাইনে। দেশের বাইরে যাঁদের কাছে বইটা নেই, কাজে লাগতে পারে।
থমাস হবসের লেভিয়াথান নিয়ে ইয়েলের তিনটা লেকচার দেখতে পারেন য়্যুট্যুবে।
The Sovereign State: Hobbes' Leviathan ( লেকচার ১)
The Sovereign State: Hobbes' Leviathan ( লেকচার ২)
The Sovereign State: Hobbes' Leviathan ( লেকচার ৩)
এডাম স্মিথের দা ওয়েলথ অব ন্যাশনস নিয়ে পেলাম একটা য়্যুট্যুব ঠুমরি।
Adam Smith, The Invisible Hand & The Wealth of Nations (সংক্ষেপে দা ওয়েলথ অব ন্যাশনস )
চাইলে ডেভিড হার্ভের সাথে ক্যাপিটাল পড়তে পারেন। ক্যাপিটাল নিয়ে আরো আগ্রহ থাকলে আলথুসারের রিডীং ক্যাপিটাল ও পড়তে পারেন।
থমাস হবসের লেভিয়াথান নিয়ে ইয়েলের তিনটা লেকচার দেখতে পারেন য়্যুট্যুবে।
The Sovereign State: Hobbes' Leviathan ( লেকচার ১)
The Sovereign State: Hobbes' Leviathan ( লেকচার ২)
The Sovereign State: Hobbes' Leviathan ( লেকচার ৩)
এডাম স্মিথের দা ওয়েলথ অব ন্যাশনস নিয়ে পেলাম একটা য়্যুট্যুব ঠুমরি।
Adam Smith, The Invisible Hand & The Wealth of Nations (সংক্ষেপে দা ওয়েলথ অব ন্যাশনস )
চাইলে ডেভিড হার্ভের সাথে ক্যাপিটাল পড়তে পারেন। ক্যাপিটাল নিয়ে আরো আগ্রহ থাকলে আলথুসারের রিডীং ক্যাপিটাল ও পড়তে পারেন।
৪
আমারবই ডট কম ঠিক আছে। কিন্তু সবাইকে সাবধান করে রাখি, আমারবই ডট অর্গ কিন্তু মগবাজারী সাইট। যার পরিচালনায় আছে জনৈক /_\ । সাধু সাবধান, কম মনে করে অর্গে যাতে কেউ না যায় ...
----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু
----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু
৫
আগে জানতাম না। ওই ডট অর্গের কথা। জানলাম তোর কাছ থেকে।
সাধু সাবধান, কম মনে করে অর্গে যাতে কেউ না যায় ...
আমারও তাই কথা।
সাধু সাবধান, কম মনে করে অর্গে যাতে কেউ না যায় ...
আমারও তাই কথা।
৭
ডাউনলোড করে চেক করছিলাম। একটা পৃষ্ঠা উল্টা স্ক্যান করা আর সামনের দুই পৃষ্ঠার মুখবন্ধটা নাই। বাকী সব ওকে।
৮
আমি ছফার একজন অন্ধভক্ত। ছফার উপর বিশেষ করে তাঁর পঠিত বইয়ের উপর এই রকম তথ্যবহুল লেখা অনলাইনে আগে দেখি নাই। এই পেজটি বুকমার্ক করে রাখলাম।
৯
ধন্যবাদ।
১০
খুব ভালো লেগেছে, পছন্দের পোস্ট এ রাখলাম।
_______________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
_______________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
১১
বুকমার্ক , এখন শুনলাম পছন্দের পোস্ট। 

১২
থ্যাংকস দাদা। আপনার ব্লগটা দেখলাম। আলোচনার topic গুলো এককথায় খুবই ভালো আর আমার ফিল্মে আগ্রহ আছে। মুভিপ্লাস থেকে যাযা পাই সব কিনা ফেলি, তবে ইমামুরার কিছু পাওয়া যায় না এখানে।
আহমদ ছফার রচনাসমগ্র কিনে,তারপরে পড়ে আপনারে জানাবো। বুকমার্ক করলাম।
আহমদ ছফার রচনাসমগ্র কিনে,তারপরে পড়ে আপনারে জানাবো। বুকমার্ক করলাম।
১৩
ইমামুরার ছবি টরেন্ট দিয়া নামাতে পারেন। ছফার বই এখনো পড়েন নাই দেখে আফসোস লাগলো।
ভালো থাকেন।
ভালো থাকেন।
১৪
আপনার লেখা আগে না পড়লে ভাবতাম নিজের বিদ্যা জাহির করতে লিখেছেন, কিন্তু সে সন্দেহ হচ্ছে না। ভালো লাগলো। পঠনপাঠনের ইতিহাস খুবই আগ্রহসঞ্চারী বিষয়। তবে ঐ ক্ষুদে ক্ষুদে ফন্টে পড়তে বড়োই অসুবিধা হলো। আরেকটা কথা: যেভাবে সব কটি বইয়ের নাম লিখছেন সেই নিয়ম মেনে কথামৃতের হিসেবটা ভুল হয়েছে। বইটার নামই হলো 'রামকৃষ্ণ কথামৃত', আর লেখক শ্রীম (মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত, একটু সন্দেহ আছে পদবীটা নিয়ে, সাথেও নেই যে চেক করি)।
যাক, লিখতে থাকুন। অপেক্ষায় রইলাম।
যাক, লিখতে থাকুন। অপেক্ষায় রইলাম।
১৫
আপনি সোজাসুজি সব বলেন। অনেক বড় একটা গুণ আপনার। এই ধরণের লেখালেখিতে প্রচুর রেফারেন্স এসে যায়। সুবিধা একটাই, এক জায়গায় অনেক তথ্য পাওয়া যায়। একটা তথ্য, যে কয়টা বইয়ের নাম লিখলাম সেগুলা ছফা পড়েছেন তিরিশ বছর সময়কালের মধ্যে। ফন্টের ব্যাপারেঃ size=11 দিয়ে করেছিলাম কোটেড কথাগুলো, তাতেই এতো ছোট হয়ে গেল। কন্ট্রোল চিপে স্ক্রল করলে ফন্ট বড় হয়। আপাতত এভাবে ছাড়া পড়ার উপায় দেখছি না।
আসলে ওটা বোধ করি শ্রীম কথিত 'রামকৃষ্ণ কথামৃত'। আমার কাছেও নাই যে ক্রসচেক করি।
আসলে ওটা বোধ করি শ্রীম কথিত 'রামকৃষ্ণ কথামৃত'। আমার কাছেও নাই যে ক্রসচেক করি।
১৮
এই লেখাতে মন্তব্য করার জন্য লগ ইন করতে বাধ্য হলাম।
প্রথমেই ধন্যবাদ এমন পরিশ্রমসাপেক্ষ একটা পোস্ট দেবার জন্য। দ্বিতীয় ধন্যবাদ ভাষার সাবলীলতার জন্য। আপনার অন্য পোস্টগুলোর তুলনায় এই লেখাটা "ভারী বিষয়ের" হলেও ভাষা স্বচ্ছন্দ। লেখার খুঁটিনাটি কিছু বিষয় নিয়ে অন্যরা এর মধ্যেই বলে দিয়েছেন - সেই ব্যাপারগুলো একটু খেয়াল রাখবেন।
"ছফাগিরি" শব্দটা দিয়ে যদি আপনার ছফাচর্চা বুঝিয়ে থাকেন তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু শব্দটা দিয়ে যদি আহমদ ছফা বিষয়ক বুঝিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে বলব একটু সতর্ক হতে। কেন? কারণ, আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন, এর মধ্যেই আপনার এই লেখা পাঠকগণ নিজেদের সুবিধামত কায়দায় রেফারেন্স হিসেবে রেখে দিচ্ছেন। তাই কাউকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান যদি নিরপেক্ষ না হয়, বিচারের ক্ষেত্রে আপনি যদি কঠোর না হন তাহলে আপনার বিশ্লেষণ শেষ পর্যন্ত স্তুতি বা নিন্দাতে পরিণত হবে।
ব্যক্তি শুভাশীষ দাশ আহমদ ছফা বা সলিমুল্লাহ খানকে যে দৃষ্টিতেই দেখুন না কেন বিচার-বর্ণনার ক্ষেত্রে তার প্রভাব না থাকাই উত্তম। আমার মনে হয়েছে লেখায় ছফা বিষয়ে আপনার ব্যক্তিগত মুগ্ধতার ছাপ পড়েছে - আপনি তাতে একমত নাও হতে পারেন - তবে আমার মনে হয়েছে তাই বললাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথমেই ধন্যবাদ এমন পরিশ্রমসাপেক্ষ একটা পোস্ট দেবার জন্য। দ্বিতীয় ধন্যবাদ ভাষার সাবলীলতার জন্য। আপনার অন্য পোস্টগুলোর তুলনায় এই লেখাটা "ভারী বিষয়ের" হলেও ভাষা স্বচ্ছন্দ। লেখার খুঁটিনাটি কিছু বিষয় নিয়ে অন্যরা এর মধ্যেই বলে দিয়েছেন - সেই ব্যাপারগুলো একটু খেয়াল রাখবেন।
"ছফাগিরি" শব্দটা দিয়ে যদি আপনার ছফাচর্চা বুঝিয়ে থাকেন তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু শব্দটা দিয়ে যদি আহমদ ছফা বিষয়ক বুঝিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে বলব একটু সতর্ক হতে। কেন? কারণ, আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন, এর মধ্যেই আপনার এই লেখা পাঠকগণ নিজেদের সুবিধামত কায়দায় রেফারেন্স হিসেবে রেখে দিচ্ছেন। তাই কাউকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান যদি নিরপেক্ষ না হয়, বিচারের ক্ষেত্রে আপনি যদি কঠোর না হন তাহলে আপনার বিশ্লেষণ শেষ পর্যন্ত স্তুতি বা নিন্দাতে পরিণত হবে।
ব্যক্তি শুভাশীষ দাশ আহমদ ছফা বা সলিমুল্লাহ খানকে যে দৃষ্টিতেই দেখুন না কেন বিচার-বর্ণনার ক্ষেত্রে তার প্রভাব না থাকাই উত্তম। আমার মনে হয়েছে লেখায় ছফা বিষয়ে আপনার ব্যক্তিগত মুগ্ধতার ছাপ পড়েছে - আপনি তাতে একমত নাও হতে পারেন - তবে আমার মনে হয়েছে তাই বললাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১৯
পাণ্ডবদা,
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
উদ্ধৃতি
কাউকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান যদি নিরপেক্ষ না হয়, বিচারের ক্ষেত্রে আপনি যদি কঠোর না হন তাহলে আপনার বিশ্লেষণ শেষ পর্যন্ত স্তুতি বা নিন্দাতে পরিণত হবে। ছফাকে বিচারের ক্ষমতা আমার নাই। স্তুতি বা নিন্দা না করে ছফা কিভাবে আমার চিন্তাধারার মধ্যে বিশাল জায়গা নিলেন আমি সেটুকু লিখে যেতে চাই। ছফা এমন লেখক তাঁকে কোট না করে উপায় থাকে না।
আপনার বাকি কথা আমি মাথায় রাখবো।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
উদ্ধৃতি
কাউকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান যদি নিরপেক্ষ না হয়, বিচারের ক্ষেত্রে আপনি যদি কঠোর না হন তাহলে আপনার বিশ্লেষণ শেষ পর্যন্ত স্তুতি বা নিন্দাতে পরিণত হবে। ছফাকে বিচারের ক্ষমতা আমার নাই। স্তুতি বা নিন্দা না করে ছফা কিভাবে আমার চিন্তাধারার মধ্যে বিশাল জায়গা নিলেন আমি সেটুকু লিখে যেতে চাই। ছফা এমন লেখক তাঁকে কোট না করে উপায় থাকে না।
আপনার বাকি কথা আমি মাথায় রাখবো।
২০
আলসেমি আর নানান কাজের চাপ নিয়ে বড় ভ্যাজালে আছি। তাই এখন আর ব্লগে সময় দেওয়া হয় না তেমন। আপনার সবগুলো পোস্ট একদিন বসে পড়ে ফেলবো বলে জমিয়ে রাখছি।
ছফাতে আমারও আগ্রহ আছে, আরো লিখুন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছফাতে আমারও আগ্রহ আছে, আরো লিখুন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
২১
উদ্ধৃতি
আপনার সবগুলো পোস্ট একদিন বসে পড়ে ফেলবো বলে জমিয়ে রাখছি।
আমার সৌভাগ্য।
আপনার সবগুলো পোস্ট একদিন বসে পড়ে ফেলবো বলে জমিয়ে রাখছি।
আমার সৌভাগ্য।

২২

আপনার মতো আমারও ছফার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল না তবে মোলাকাত হয়েছে কয়েকবার কিন্তু তেমন আলাপ হয়নি ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
২৩
মানিক ভাই,
আপনাকে ধন্যবাদ। এটাই বোধ করি ছফাকে নিয়ে আপনার শেষ পোষ্ট।
আহমদ ছফার চিন্তা ও দর্শন -১ -য়ের পর কি কিছু ছাপিয়েছেন?
আপনাকে ধন্যবাদ। এটাই বোধ করি ছফাকে নিয়ে আপনার শেষ পোষ্ট।
আহমদ ছফার চিন্তা ও দর্শন -১ -য়ের পর কি কিছু ছাপিয়েছেন?
২৪
বেশ তথ্যবহুল ।
... চলুক।
______________________________________________________
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
... চলুক।
______________________________________________________
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
২৫
সুহান সাহেব , মন্তব্য করেছেন দেখে ভাল লাগলো।
২৬
ছফা খুবই পছন্দের লোক। যদ্যপি আমার গুরু তাঁর লেখা আমার সবচেয়ে পছন্দের বই, পড়ে মজা পাইলাম স্যার।
২৭

২৮
শুভাশীষ দাশ, অনেক অনেক ধন্যবাদ। মানিক আর ছফা আমার খুব প্রিয় একজন লেখক। জীবনকে তীর্যক কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে দেখার তাদের সতন্ত্র উদ্যোগ আলোচনার দাবী রাখে। পছন্দের পোস্ট এ রাখার জন্য লগইন করলাম। আমার নামটা অনেক খট্মটো তাই লগইন করা হয় না।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
২৯
গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত ...... এভাবেই তো ছোটবেলা থেকে পড়ে আসতেছি। খট্মটো তো লাগে নাই।
মন্তব্যের জন্য সেলাম।

মন্তব্যের জন্য সেলাম।
৩০
লগইনের জন্য তাড়াতাড়ি টাইপ করতে গিয়ে মনের ভুলে ব্ররষা হয়ে যায়... 
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
৩১
উদ্ধৃতি
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীকে পূর্ববাংলার মুসলিম বলে সম্বোধনকারী আহমদ ছফা কিংবা মেজর ডালিমের পরিবারের সাথে সম্পর্কিত আবদুর রাজ্জাক- এসব দিয়ে তাঁদের বিচার করা অতি সরলীকরণ। আমার সহজ বুদ্ধি তাই বলে।
---একমত। সবধরনের সরলীকরণই খারাপ--এমনকি আমার এই কথাটিও

৩২
মামুন ভাই,
আমার কাছে এই মুহূর্তে ছফার লেখা সব বই নাই। যে কয়টা আছে তা দিয়ে আরেকটা লেখা নামাবো। পরে।
ভাল থাকবেন।
আমার কাছে এই মুহূর্তে ছফার লেখা সব বই নাই। যে কয়টা আছে তা দিয়ে আরেকটা লেখা নামাবো। পরে।
ভাল থাকবেন।
৩৩
উদ্ধৃতি
অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক শিক্ষক হিসেবে কিংবদুন্ততুল্য। তাঁর দীর্ঘজীবনের পাণ্ডিত্য ও প্রজ্ঞার সমস্ত প্রকারের ঔজ্জ্বল্যকে ছাপিয়ে ওঠে আর-একটি বিষয়: অধ্যাপক রাজ্জাক তাঁর অগাধ জ্ঞান ভাণ্ডারকে সর্বদাই রেখে গেছেন এক-অর্থে আড়ালেই। কারণ তিনি কোনো বই লেখেননি যার ভিতর দিয়ে আমাদের মতো সাধারণ জ্ঞানপিপাসু তার মেধা ও প্রজ্ঞাকে ছুঁয়ে দেখতে পারে। ফলে এই দূরত্ব, তাঁর ছাত্র ও সহচর্যহীন মানুষদের কাছে তাঁর বিষয়ে এক প্রকারের দূরত্ব রচনা করেছে। সেই সঙ্গে তাঁরাই সেই সৌভাগ্যে ভাগীদার হয়েছেন, তাঁর পাণ্ডিত্যের স্পর্শ পেয়েছেন যাঁরা তাঁর নিকটবাসী হয়েছেন। তাঁর পাণ্ডিত্য বাংলাদেশের বহু শিক্ষিতজনকেই স্পর্শ করেছে। তাঁর ছাত্র ও ছাত্রপ্রতিম অনেকেই নিজেকে পরবর্তীকালে কৃত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।যদ্যপি আমার গুরু ছফার আরেকটা মাস্টারপিস। রাজ্জাক স্যারের কপাল - এমন সাগরেদ তিনি পেয়েছিলেন। স্মৃতিচারণ কতোটা অন্তরঙ্গ আর বুদ্ধিদীপ্ত হতে পারে ছফার এই বই না পড়লে বোঝা যাবে না।
আমার কেনো জানি মনে হয়েছে, যদ্যপি আমার গুরু রচনার ভিতর দিয়ে সেই দায়ের ভারই যেন তুলে নেন আহমদ ছফা, একজন মেধাবী ও মননশীল শিক্ষক -তাঁর বচনে ও চিন্তায় ছাত্র ও ছাত্রতূল্যরা আলোকিত হতেন, আহমদ ছফা নিজেও হয়েছিলেন--এবং সেই আলোকিত হওয়ার দায় থেকেই তিনি রচনা করেছের এই গ্রন্থ। এ-ধরনের গ্রন্ধ বাংলাদেশে প্রথম--সর্বঅর্থেই।
অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের কোনো লেখা আমাদের সামনে না-থাকার অর্থ এক অর্থে তাঁকে হারানোই, তাঁকে অনুপস্থিত পাওয়া। এই বিশিষ্ট শিক্ষক আমাদের সেই অপ্রাপ্তির ভার বয়ে নেয়ার কাজটি সারাজীবন কলম বন্ধ রেখে ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন। তবে তা লাঘবের ভার, সামান্য হলেও, আহমদ ছফা যদ্যপি আমার গুরু রচনায় আমাদের সামনে রেখেছেন বলে আমার মনে হয়েছে।
আপনার লেখার আরো বিস্তারিত পাঠ আরো অনেক সুপ্ত ভাবনাকে উসকে দিবে বলে মনে হচ্ছে। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী কিস্তির।
৩৪
প্রিয় ছবিওলা,
আপনার দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।১৯৯৯-২০০০ সালের দিকে আমি টুকটাক লিখতাম। যদ্যপি আমার গুরু পড়েছিলাম ২০০০ সনে। তারপর থেকে আমি মূলত পাঠক
হয়ে গেছি। নানান কিছু পড়েছি। কোন কিছু লিখি নি।
সম্প্রতি লেখা শুরু করেছি আবার।
ভালো থাকবেন।
আপনার দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।১৯৯৯-২০০০ সালের দিকে আমি টুকটাক লিখতাম। যদ্যপি আমার গুরু পড়েছিলাম ২০০০ সনে। তারপর থেকে আমি মূলত পাঠক

ভালো থাকবেন।
৩৫
প্রিয়তে যোগ করে রাখলাম। অনেকবার মন দিয়ে পড়তে হবে
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
৩৬
থ্যাংকু ম্যাডাম।
৩৭
যদ্যপি আমার গুরু ছাড়া আর কোন বই এর নরম কপি আছে নাকি? বিশেষ করে প্রবন্ধ গুলোর। বা আপনার কাছে প্রবন্ধগুলো যদি থাকে তবে স্ক্যান করে পাঠালে খুশি হব। ছফাকে নিয়ে এই লেখায় অনেক কিছু জানা যাবে।
৩৮
নূরুল আনোয়ারের লেখাটা পড়ি নিয়মিত। যাইহোক। আর স্ক্যান করতে পারলে এই লেখায় লিঙ্ক দিবো।
৩৯
কিন্তু শুভাশীষ,
ছফাকে নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে, অতি সরলীকরন বলে যদি আপনি বাতিল করে দেন তাহলে কোন কথা নেই, বাতিল না করলে কথা হতে পারেঃ-
১। ছফাকে একজন মুক্তমনা,প্রগতিশীল,অসাম্প্রদায়িক ও শুভবোধসম্পন্ন বুদ্ধিজীবি হিসেবেই আমরা জানি ও মানি। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক বিরাট পন্ডিত ছিলেন নিঃসন্দেহে। কিন্তু পান্ডিত্যই কি শেষ কথা? '৭১ এ ঢাবির উপাচার্য ছিলো যে সাজ্জাদ হোসেন, হত্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তালিকা করে দিয়েছিলো যে - সে ও কিন্তু বিরাট পন্ডিত ছিলো।
রাজ্জাক সাহেব যতো বড় পন্ডিতই থাকুন না কেনো, তিনি তো পাঁড় মুসলিম লীগার ছিলেন, তাইনা? অর্থ্যাৎ তিনি এই ভূ-খন্ডের মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে দুই জাতি হিসেবে চিহ্নিত করতেন, জিন্নাহর টু নেশন থিওরির সমর্থক ছিলেন এবং জিন্নাহকে নেতা হিসেবে মানতেন। পাকিস্তান আন্দোলনের আগে আগে সেই সময়ের প্রায় সকলেই এই বিভ্রান্তিতে ভুগেছিলেন যাদের অনেকেই পরবর্তীতে এ থেকে বের হয়ে এসেছেন কিন্তু অধ্যাপক রাজ্জাক তার মুসলিম লীগ মোহ থেকে বের হয়ে এসেছিলেন এরকম কোন তথ্য কি আছে?
যদি না থাকে তাহলে ছফার মতো একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষের সাম্প্রদায়িক( সাম্প্রদায়িক না হলে কেউ মুসলিম লীগ করবে কেনো?) পন্ডিতকে গুরু মানাটা ভজঘট হয়ে গেলো না?
২। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, আহমদ ছফা হয়ে সলিমুল্লাহ খান, ফরহাদ মাজহার এমনকি অধুনা কমিউনিষ্টরা পর্যন্ত দেখি পূর্ব বাংলার জনগোষ্ঠীর ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে বারবার পূর্ববাংলার মুসলমানের কথাই বলেন- যেনো এই বাংলা কেবল মুসলমানদেরই। দেশ বিভাগের সময় হিন্দু, মুসলমান অনুপাত কতো ছিলো? সেই হিন্দুদের সকলেই কি উচ্চবিত্ত, শোষক শ্রেনীর ছিলো?
বারবার পূর্ব বাংলার মুসলমান হিসেবে এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে পরিচিত করানোর এই বুদ্ধিবৃত্তিক চেষ্টাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন?
৩।যদ্যপি আমার গুরুতে'ই ছফা দাবী করছেন তার গুরুই ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা, যদি ও এর সপক্ষে কোন তথ্য হাজির করেননি।
একজন পাঁড়মুসলিম্লীগার যার কাছে বাষ্টার্ড জিন্নাহ ছিলো অনেক বড় নেতা- তাকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা বলে প্রচার করার এই 'ছফাগিরি' বিষয়ে আপনার মতামত কি?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ছফাকে নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে, অতি সরলীকরন বলে যদি আপনি বাতিল করে দেন তাহলে কোন কথা নেই, বাতিল না করলে কথা হতে পারেঃ-
১। ছফাকে একজন মুক্তমনা,প্রগতিশীল,অসাম্প্রদায়িক ও শুভবোধসম্পন্ন বুদ্ধিজীবি হিসেবেই আমরা জানি ও মানি। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক বিরাট পন্ডিত ছিলেন নিঃসন্দেহে। কিন্তু পান্ডিত্যই কি শেষ কথা? '৭১ এ ঢাবির উপাচার্য ছিলো যে সাজ্জাদ হোসেন, হত্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তালিকা করে দিয়েছিলো যে - সে ও কিন্তু বিরাট পন্ডিত ছিলো।
রাজ্জাক সাহেব যতো বড় পন্ডিতই থাকুন না কেনো, তিনি তো পাঁড় মুসলিম লীগার ছিলেন, তাইনা? অর্থ্যাৎ তিনি এই ভূ-খন্ডের মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে দুই জাতি হিসেবে চিহ্নিত করতেন, জিন্নাহর টু নেশন থিওরির সমর্থক ছিলেন এবং জিন্নাহকে নেতা হিসেবে মানতেন। পাকিস্তান আন্দোলনের আগে আগে সেই সময়ের প্রায় সকলেই এই বিভ্রান্তিতে ভুগেছিলেন যাদের অনেকেই পরবর্তীতে এ থেকে বের হয়ে এসেছেন কিন্তু অধ্যাপক রাজ্জাক তার মুসলিম লীগ মোহ থেকে বের হয়ে এসেছিলেন এরকম কোন তথ্য কি আছে?
যদি না থাকে তাহলে ছফার মতো একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষের সাম্প্রদায়িক( সাম্প্রদায়িক না হলে কেউ মুসলিম লীগ করবে কেনো?) পন্ডিতকে গুরু মানাটা ভজঘট হয়ে গেলো না?
২। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, আহমদ ছফা হয়ে সলিমুল্লাহ খান, ফরহাদ মাজহার এমনকি অধুনা কমিউনিষ্টরা পর্যন্ত দেখি পূর্ব বাংলার জনগোষ্ঠীর ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে বারবার পূর্ববাংলার মুসলমানের কথাই বলেন- যেনো এই বাংলা কেবল মুসলমানদেরই। দেশ বিভাগের সময় হিন্দু, মুসলমান অনুপাত কতো ছিলো? সেই হিন্দুদের সকলেই কি উচ্চবিত্ত, শোষক শ্রেনীর ছিলো?
বারবার পূর্ব বাংলার মুসলমান হিসেবে এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে পরিচিত করানোর এই বুদ্ধিবৃত্তিক চেষ্টাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন?
৩।যদ্যপি আমার গুরুতে'ই ছফা দাবী করছেন তার গুরুই ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা, যদি ও এর সপক্ষে কোন তথ্য হাজির করেননি।
একজন পাঁড়মুসলিম্লীগার যার কাছে বাষ্টার্ড জিন্নাহ ছিলো অনেক বড় নেতা- তাকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা বলে প্রচার করার এই 'ছফাগিরি' বিষয়ে আপনার মতামত কি?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
৪০
হাসান মোরশেদ। আপনাকে ধন্যবাদ। পড়ার জন্য। মন্তব্যের জন্য। অধ্যাপক রাজ্জাক আর তাঁর মুসলিম লীগ মোহ নিয়ে আমাদের জানতে হলে আহমদ ছফা আর সরদার (ইদানীং কিছু ব্লগার তাঁকে সর্দার বা সরদারজি লিখছে যা পীড়াদায়ক) ফজলুল হকের দুটি বই ছাড়া আমাদের অন্য কোন পথ নাই। কিছুটা রাজ্জাক সাহেবের পালস্ ধরতে গেলে ছফার বইটার অধ্যায় আট আর ষোল কয়েকবার পাঠ জরুরী। ছফার রাজ্জাকপ্রেম আর যাই হোক ভজঘট কিছু না। আমার কথা শোনার চেয়ে ছফার বইটা কিংবা তাঁর নানান সাক্ষাৎকার ভালো করে পড়লে এটার আন্দাজ করতে পারবেন।
রাজ্জাক সাহেব একটা জেনারেশনের লোকের বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিকতার উৎকর্ষে কাজ করে গেছেন। তাঁর প্রচেষ্টাকে কিছু অভিযোগে নাকচ করে দেয়া মানে সেই জেনারেশনের সব মানুষের জ্ঞানভিত্তিক প্রয়াসকে নাল করে দেয়া। আমি আমার লেখায় বইয়ের নাম আর লিঙ্কের পাহাড় করেছি এই কারণে। ছফা থেকে আবার একটু কোট করে দেই-
রাজ্জাক সাহেব মুসলিম লীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তান দাবির সমর্থক ছিলেন। সেই পরিবেশ পরিস্থিতিতে তিনি মনে করেছিলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলেই বাংলার মুসলমান সমাজের উপকার হবে। বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে পড়ে তোলার ধারণাটিও রাজ্জাক সাহেবের মস্তক থেকে এসেছিল। ভারত ভেঙে পাকিস্তান হয়েছে। এক-জাতিতত্ত্বের বদলে দ্বি- জাতিতত্ত্বের বিজয় সূচিত হয়েছে। পাকিস্তান ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে দ্বি- জাতিতত্ত্বের মৃত্যু ঘটলো, কিন্তু এই ঘটনা এক-জাতিতত্ত্ব সত্য প্রমাণিত হওয়ার স্বীকৃতি, নাকি ভারতবর্ষে বহু-জাতীয়তার উদ্বোধন, সেই বিষয়টি এখনো সুস্পষ্ট আকার লাভ করেনি। এই ঐতিহাসিক পরিবর্তন রূপান্তরের মধ্যে রাজ্জাক সাহেব যে অবস্থানটি গ্রহণ করেছিলেন, তা সঠিক কি বেঠিক ছিল সে বিতর্কেও আমি প্রবৃত্ত হবো না। আমি শুধু একটি কথাই জোর দিয়ে বলবো, রাজ্জাক সাহেব মনেপ্রাণে একজন খাঁটি সেক্যুলার মানুষ। কিন্তু বাঙালি মুসলমানসমাজের সেক্যুলারিজমের বিকাশের প্রক্রিয়াটি সমাজে ভেতর থেকে, বাঙালি মুসলমানের সামাজিক অভিজ্ঞতার স্তর থেকে বিকশিত করে তুলতে হবে, একথা তিনি মনে করতেন।
পূর্ববাংলার মুসলমানের কথা তাঁরা বলে গেছেন,কারণ তাঁরা ওই সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন। সমগ্র জনগোষ্ঠীকে মুসলমান বলতে যাবেন কেন?
আর সলিমুল্লাহ খানের মতাদর্শকে ফরহাদ মজহারের সাথে গুলিয়ে ফেলা ঠিক না বলেই মনে করি।
আপনার তিন নাম্বার পয়েন্ট আপনার মন্তব্যে নতুন সংযোগ হিসাবে দেখলাম। আমি একটা পাল্টা প্রশ্ন করি। ছফা রাজ্জাক বাদ দিয়ে বাংলাদেশের দুজন লোকের নাম বলুন যারা আপনার চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করতে পারে কিংবা যাঁদের মনীষার কান্তিতে আপনি সন্মোহিত হবেন। অতি সরলীকরণের যে কথা বলেছিলাম আপনি সেই জায়গা থেকে বেরোতে পারছেন না। আপনার বক্তব্য জানিয়ে একটা আলাদা পোস্ট আশা করছি। আর জিন্নাহকে আমিও বাস্টার্ড মনে করি।
রাজ্জাক সাহেব একটা জেনারেশনের লোকের বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিকতার উৎকর্ষে কাজ করে গেছেন। তাঁর প্রচেষ্টাকে কিছু অভিযোগে নাকচ করে দেয়া মানে সেই জেনারেশনের সব মানুষের জ্ঞানভিত্তিক প্রয়াসকে নাল করে দেয়া। আমি আমার লেখায় বইয়ের নাম আর লিঙ্কের পাহাড় করেছি এই কারণে। ছফা থেকে আবার একটু কোট করে দেই-
রাজ্জাক সাহেব মুসলিম লীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তান দাবির সমর্থক ছিলেন। সেই পরিবেশ পরিস্থিতিতে তিনি মনে করেছিলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলেই বাংলার মুসলমান সমাজের উপকার হবে। বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে পড়ে তোলার ধারণাটিও রাজ্জাক সাহেবের মস্তক থেকে এসেছিল। ভারত ভেঙে পাকিস্তান হয়েছে। এক-জাতিতত্ত্বের বদলে দ্বি- জাতিতত্ত্বের বিজয় সূচিত হয়েছে। পাকিস্তান ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে দ্বি- জাতিতত্ত্বের মৃত্যু ঘটলো, কিন্তু এই ঘটনা এক-জাতিতত্ত্ব সত্য প্রমাণিত হওয়ার স্বীকৃতি, নাকি ভারতবর্ষে বহু-জাতীয়তার উদ্বোধন, সেই বিষয়টি এখনো সুস্পষ্ট আকার লাভ করেনি। এই ঐতিহাসিক পরিবর্তন রূপান্তরের মধ্যে রাজ্জাক সাহেব যে অবস্থানটি গ্রহণ করেছিলেন, তা সঠিক কি বেঠিক ছিল সে বিতর্কেও আমি প্রবৃত্ত হবো না। আমি শুধু একটি কথাই জোর দিয়ে বলবো, রাজ্জাক সাহেব মনেপ্রাণে একজন খাঁটি সেক্যুলার মানুষ। কিন্তু বাঙালি মুসলমানসমাজের সেক্যুলারিজমের বিকাশের প্রক্রিয়াটি সমাজে ভেতর থেকে, বাঙালি মুসলমানের সামাজিক অভিজ্ঞতার স্তর থেকে বিকশিত করে তুলতে হবে, একথা তিনি মনে করতেন।
পূর্ববাংলার মুসলমানের কথা তাঁরা বলে গেছেন,কারণ তাঁরা ওই সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন। সমগ্র জনগোষ্ঠীকে মুসলমান বলতে যাবেন কেন?
আর সলিমুল্লাহ খানের মতাদর্শকে ফরহাদ মজহারের সাথে গুলিয়ে ফেলা ঠিক না বলেই মনে করি।
আপনার তিন নাম্বার পয়েন্ট আপনার মন্তব্যে নতুন সংযোগ হিসাবে দেখলাম। আমি একটা পাল্টা প্রশ্ন করি। ছফা রাজ্জাক বাদ দিয়ে বাংলাদেশের দুজন লোকের নাম বলুন যারা আপনার চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করতে পারে কিংবা যাঁদের মনীষার কান্তিতে আপনি সন্মোহিত হবেন। অতি সরলীকরণের যে কথা বলেছিলাম আপনি সেই জায়গা থেকে বেরোতে পারছেন না। আপনার বক্তব্য জানিয়ে একটা আলাদা পোস্ট আশা করছি। আর জিন্নাহকে আমিও বাস্টার্ড মনে করি।
৪১
রাজ্জাক সাহেব যে পাঁড় মুসলিম লীগার এবং জিন্নাহর বড় ভক্ত ছিলেন সেটা তো ছফা পড়েই জেনেছি শুভাশিষ। ছফাকে প্রশ্ন করার সৌভাগ্য তো আর হবেনা কোনদিন সে কারনে আপনার সাথেই কথাবার্তা( হেতু হলো আপনার আদ্যোপান্ত ছফা পাঠ ও ছফা মুগ্ধতা)- নিজে অসাম্প্রদায়িক হলে একজন সাম্প্রদায়িক লোককে গুরু মানা কি করে সম্ভব হয়? নাকি ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ঘোর সমর্থক হয়েও অসাম্প্রদায়িক হওয়া যায়?
রাজ্জাক সাহেব একটা জেনারেশনের বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিকতার উৎকর্ষে কাজ করে গেছেন। আপনি বলছেন
এখন রাজ্জাক সাহেব একটা জেনারেশনের বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিকতার উৎকর্ষে কাজ করে গেছেন বলে তার হিন্দু-মুসলমান আলাদা জাতি তত্বে সমর্থন, ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিতে অংশগ্রহন এসবের সমালোচনা করা যাবেনা? তার জেনারেশনের মানুষের জ্ঞানভিত্তিক প্রয়াস নাল হয়ে যাবে বলে এইসব অশুভ উপাদানকে আপনি প্রশ্নবিদ্ধ করবেননা।
গুরুকে নিয়ে ছফার এই উদ্বৃতিতে আমার দারুন আগ্রহ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটা তথ্য তাইনা? কিন্তু ঐ এক লাইন ছাড়া আর কোথাও এই দাবীর পক্ষে কিছু দেখিনা। আপনার ছফা এবং রাজ্জাক পাঠ আমার চেয়ে অনেক বেশী। এ বিষয়ে আর কিছু জানলে জানাবেন তো প্লিজ।
এমনকি আহমদ ছফা ও শুভাশিষ? আহমদ ছফা এই ভূ-খন্ডের মুসলমানদেরই প্রতিনিধিত্ব করেন শুধু? সমগ্র মানুষের নয়? আপনার এই বক্তব্য যদি ঠিক হয় তাহলে অনেক হিসেব মিলে যায় কিন্তু।
ওঁহু, মতাদর্শ এক কিনা তা তো বলিনি। বলেছি- আবুর রাজ্জাক, ছফা, মজহার, সলিমুল্লাহ খানরা তাদের লেখায় পুর্ব বাংলার জনগোষ্ঠীকে কেবল পূর্ববাংলার মুসলমান বলেই চিহ্নিত করেন, এমনকি ৪৭ পূর্ব সময়ে যেখানে অমুসলিম জনগোষ্ঠী ৪০% এর বেশী ছিলো সেই সময়ের অমুসলিমদের কথা ও আসেনা , যতোটুকু আসে তাতে চিত্রটা এমন যে ঐ সময়ের মুসলমান মানেই দরিদ্র, নিম্নশ্রেনীর আর অমুসলিমদের সকলেই ছিলো শোষক ধনিক গোষ্ঠী।
হাহাহা... ধরে নিলাম নেই, একজন ও নেই। সে ক্ষেত্রে আমি মনীষার কান্তিতে সম্মোহিত হবার সৌভাগ্য পায়ে ঠেলে দিবো তবু ধর্মের ভিত্তিতে জাত বিভাজনে আস্থা আছে এমন কোন মহাপন্ডিত কিংবা তার সাগরেদের চিন্তাধারায় প্রভাবিত হবোনা।
হ্যাঁ এই পয়েন্টে আমার চিন্তাভাবনা একেবারেই সরল-স্ট্রেটকাট। একটা পোষ্ট ছিলো প্রাসঙ্গিক, সময় করে পড়তে পারেনঃ-
।।অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাককে যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা বানিয়ে দেয়া হয়।।
আমার ফেসবুক একাউন্টে এটি নোট হিসেবে ও পাবেন। সচলায়তনের বাইরের কিছু জরুরী মন্তব্য আছে ওই নোটে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
রাজ্জাক সাহেব একটা জেনারেশনের বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিকতার উৎকর্ষে কাজ করে গেছেন। আপনি বলছেন
উদ্ধৃতি
তাঁর প্রচেষ্টাকে কিছু অভিযোগে নাকচ করে দেয়া মানে সেই জেনারেশনের সব মানুষের জ্ঞানভিত্তিক প্রয়াসকে নাল করে দেয়া
এখন রাজ্জাক সাহেব একটা জেনারেশনের বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিকতার উৎকর্ষে কাজ করে গেছেন বলে তার হিন্দু-মুসলমান আলাদা জাতি তত্বে সমর্থন, ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিতে অংশগ্রহন এসবের সমালোচনা করা যাবেনা? তার জেনারেশনের মানুষের জ্ঞানভিত্তিক প্রয়াস নাল হয়ে যাবে বলে এইসব অশুভ উপাদানকে আপনি প্রশ্নবিদ্ধ করবেননা।
উদ্ধৃতি
বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে পড়ে তোলার ধারণাটিও রাজ্জাক সাহেবের মস্তক থেকে এসেছিল।
গুরুকে নিয়ে ছফার এই উদ্বৃতিতে আমার দারুন আগ্রহ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটা তথ্য তাইনা? কিন্তু ঐ এক লাইন ছাড়া আর কোথাও এই দাবীর পক্ষে কিছু দেখিনা। আপনার ছফা এবং রাজ্জাক পাঠ আমার চেয়ে অনেক বেশী। এ বিষয়ে আর কিছু জানলে জানাবেন তো প্লিজ।
উদ্ধৃতি
পূর্ববাংলার মুসলমানের কথা তাঁরা বলে গেছেন,কারণ তাঁরা ওই সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন।
এমনকি আহমদ ছফা ও শুভাশিষ? আহমদ ছফা এই ভূ-খন্ডের মুসলমানদেরই প্রতিনিধিত্ব করেন শুধু? সমগ্র মানুষের নয়? আপনার এই বক্তব্য যদি ঠিক হয় তাহলে অনেক হিসেব মিলে যায় কিন্তু।
উদ্ধৃতি
আর সলিমুল্লাহ খানের মতাদর্শকে ফরহাদ মজহারের সাথে গুলিয়ে ফেলা ঠিক না বলেই মনে করি।
ওঁহু, মতাদর্শ এক কিনা তা তো বলিনি। বলেছি- আবুর রাজ্জাক, ছফা, মজহার, সলিমুল্লাহ খানরা তাদের লেখায় পুর্ব বাংলার জনগোষ্ঠীকে কেবল পূর্ববাংলার মুসলমান বলেই চিহ্নিত করেন, এমনকি ৪৭ পূর্ব সময়ে যেখানে অমুসলিম জনগোষ্ঠী ৪০% এর বেশী ছিলো সেই সময়ের অমুসলিমদের কথা ও আসেনা , যতোটুকু আসে তাতে চিত্রটা এমন যে ঐ সময়ের মুসলমান মানেই দরিদ্র, নিম্নশ্রেনীর আর অমুসলিমদের সকলেই ছিলো শোষক ধনিক গোষ্ঠী।
উদ্ধৃতি
ছফা রাজ্জাক বাদ দিয়ে বাংলাদেশের দুজন লোকের নাম বলুন যারা আপনার চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করতে পারে কিংবা যাঁদের মনীষার কান্তিতে আপনি সন্মোহিত হবেন।
হাহাহা... ধরে নিলাম নেই, একজন ও নেই। সে ক্ষেত্রে আমি মনীষার কান্তিতে সম্মোহিত হবার সৌভাগ্য পায়ে ঠেলে দিবো তবু ধর্মের ভিত্তিতে জাত বিভাজনে আস্থা আছে এমন কোন মহাপন্ডিত কিংবা তার সাগরেদের চিন্তাধারায় প্রভাবিত হবোনা।
হ্যাঁ এই পয়েন্টে আমার চিন্তাভাবনা একেবারেই সরল-স্ট্রেটকাট। একটা পোষ্ট ছিলো প্রাসঙ্গিক, সময় করে পড়তে পারেনঃ-
।।অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাককে যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা বানিয়ে দেয়া হয়।।
আমার ফেসবুক একাউন্টে এটি নোট হিসেবে ও পাবেন। সচলায়তনের বাইরের কিছু জরুরী মন্তব্য আছে ওই নোটে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
৪২
মোরশেদ ভাই, আমার বক্তব্য বুঝতে গেলে আপনাকে আমার লেখাটা আর একটু মন দিয়ে পড়তে হবে ,ওহ সরি- যাঁদেরকে পায়ে ঠেলছেন তাঁদের বিষয়ে লেখা পড়ে সময় নষ্ট করার দরকারই বা কী। আমি ছফাগিরির কিস্তি ২ লেখা শুরু করেছি। আপনার প্রশ্নগুলো মাথায় থাকবে। আমি আপনার কাছ থেকে একটা পোস্ট আশা করছি।এঁদের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে।
ভালো থাকুন। বাই দা ওয়ে, আমার নামের বানান শুভাশীষ।
৪৩
নামের বানানের জন্য দুঃখিত শুভাশীষ।
আপনি কি একটু স্পষ্ট বলবেন আমার মন্তব্য প্রতিমন্তব্যের কোন অংশে মনে হলো আপনার পোষ্ট পাঠে আমি অমনোযোগী?
রাজ্জাক সাহেবের জ্ঞান-মনীষা নিয়ে কথা বলার ন্যুনতম যোগ্যতা আমার নেই, তাই ওটি আমি এড়িয়ে যাচ্ছি। সাধারন মানুষ হিসেবে রাজনীতি আমাকে প্রভাবিত করে তাই আমার রাষ্ট্রের যে কারো রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আমি ভাবতে পারি, তাইনা?
রাজ্জাক সাহেবের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আমি যে প্রশ্ন উত্থাপন করেছি সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? আপনি কি এটাকে শুভ না অশুভ মনে করেন?
এর আগেও এ বিষয়ক আলোচনায় সবাই খালি উপদেশ দিয়েছেন আরো পড়তে হবে, বুঝতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর কেউ দিলেন না।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আপনি কি একটু স্পষ্ট বলবেন আমার মন্তব্য প্রতিমন্তব্যের কোন অংশে মনে হলো আপনার পোষ্ট পাঠে আমি অমনোযোগী?
রাজ্জাক সাহেবের জ্ঞান-মনীষা নিয়ে কথা বলার ন্যুনতম যোগ্যতা আমার নেই, তাই ওটি আমি এড়িয়ে যাচ্ছি। সাধারন মানুষ হিসেবে রাজনীতি আমাকে প্রভাবিত করে তাই আমার রাষ্ট্রের যে কারো রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আমি ভাবতে পারি, তাইনা?
রাজ্জাক সাহেবের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আমি যে প্রশ্ন উত্থাপন করেছি সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? আপনি কি এটাকে শুভ না অশুভ মনে করেন?
এর আগেও এ বিষয়ক আলোচনায় সবাই খালি উপদেশ দিয়েছেন আরো পড়তে হবে, বুঝতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর কেউ দিলেন না।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
৪৪
মোরশেদ ভাই, একটা সিম্পল কথা। আমি নিজেও জানি এই ব্যাপারটায় কথাগুলো আমাদের অন্যদের মুখে শুনতে হচ্ছে। রাজ্জাক সাহেবের নিজের কথা নিজে বলে যান নাই। এটাই প্রবলেম। আমি জানি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ। ছফাও সেটাকে প্রশ্নের আকারে লিখেছেন। ছফা তাঁকে বাংলাদেশের আব্বা, পিতা কি স্বপ্নদ্রষ্টা বলেছেন সেটা তাঁর নিজের ব্যাপার। কেন বলেছেন সেটার ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন নানান সাক্ষাৎকারে। আমি এখন মার্কিন দেশে। সব রেফারেন্স দিতে পারছি না বলে সরি। ছফা বললেই রাজ্জাক সাহেবকে বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা একথা এদেশের অধিকাংশ মেনে নেবে না। আমি নিজেও মানি না।
আমি যে জায়গায় আমার লেখার ইতি টেনেছিলাম তা হলো অতি-সরলীকরণ না করার জন্যে। আমারে একটু কিস্তি ২ নামাতে দেন। প্লিজ। আমি তাঁদের মনীষার দিকটা দেখানোর জন্যে লেখাটা ধরছিলাম।
আপনি মনোযোগী পাঠক , আমি জানি। ভালো থাকবেন। এখন আমার একটা দুটা গল্প পড়েন তো। আমি একটু চা খেতে যাবো ভাই।

৪৫
আমি পিছন থেকে সামনে পড়লাম। তিন দেন দুই দেন এক। এক কথায় অসাধারণ। লিখতে থাকেন ভাইজান।
৪৬
ধন্যবাদ।