Wednesday, May 15, 2013

রাজনৈতিক ইসলাম ও জঙ্গীবাদের প্রাণের যোগ

এম এম আকাশ
মে ১০, ২০১৩
M-M-Akash-Edited111111111113111311ভূমিকা :
আমরা প্রায়ই মৌলবাদ, ধর্মীয় মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থী ইত্যাদি বিভিন্ন শব্দ আমাদের কথাবার্তায় একার্থে বা বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার করে থাকি। ফলে এদের প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকের পার্থক্য বা সীমারেখাটি অস্পষ্ট হয়ে যায় এবং আমাদের বক্তব্যগুলো বহুবিধ ব্যাখ্যার অস্পষ্টতায় আক্রান্ত হয়। সে জন্য এ প্রবন্ধে আমি ‘জঙ্গীবাদ’ শব্দটি বিশেষ কী অর্থে ব্যবহার করব তা প্রথমে পরিষ্কার করে নেওয়া বাঞ্ছনীয় বলে মনে করি।
আক্ষরিক অর্থে ‘জঙ্গীবাদ’ শব্দটি ‘জঙ্গ’ বা যুদ্ধ থেকে উদ্ভূত। সেদিক থেকে দেখলে যে কোনো ‘যুদ্ধবাজ’ মানবগোষ্ঠীকে ‘জঙ্গী’ এবং তাদের মতবাদকে ‘জঙ্গীবাদ’ বলা যেতে পারে। কিন্তু এমন দল বা মানবগোষ্ঠী পাওয়া মুশকিল যারা কোনো না কোনোভাবে তাদের শ্রেণিশত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত নয়। যদিও সে যুদ্ধ সর্বদা সশস্ত্র্র রূপ ধারণ করে না, কখনও কখনও নিরস্ত্র এবং শান্তিপূর্ণও হয়ে থাকে। তাই বলে সমগ্র মানবজাতিকে ‘জঙ্গীবাদী’ বলা নিশ্চয়ই হাস্যকর ব্যাপার হবে।
জঙ্গীদের বা জঙ্গীবাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যুদ্ধকেই তারা একটি ‘আদর্শ’ বলে গ্রহণ করে বা ‘পরম’ গণ্য করে। আত্মরক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে নিপীড়িতের যে যুদ্ধ সেটির সঙ্গে জঙ্গীবাদের প্রস্তাবিত যুদ্ধের মৌলিক তফাৎ রয়েছে। জঙ্গীবাদীরা আক্রমণাত্মক আদর্শের অুসারী। নিজেদের মতাদর্শকে তারা সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করেই (প্রায়ই তারা মতাদর্শের ধর্মীয়করণ ঘটিয়ে থাকে এবং একে ঈশ্বরপ্রদত্ত বিধান বা মতাদর্শের রূপদান করে) ক্ষান্ত হয় না, সমাজে সে আদর্শের প্রভুত্ব বা আধিপত্য কায়েমের জন্য এর শত্রুদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র নিষ্ঠুর ক্ষমাহীন সংগ্রামের ঘোষণা দেয়। এ অর্থে জঙ্গীবাদীরা উদার মানবতাবাদ ও গণতন্ত্র শুধু নয়, মধ্যপন্থারও বিরোধী। আর সেটা নীতিগতভাবেই। তারা নিজস্ব মতবাদের প্রয়োগের ক্ষেত্রে মূলত ফ্যাসিবাদের অনুসারী।
হিটলারের মতো সকল জঙ্গীবাদীদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আক্রমণ করে, বলপ্রয়োগ করে, যুদ্ধ করে নিজেদের মতবাদ ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা। এর সবচেয়ে ভয়ানক ও যুক্তিহীন রূপ হচ্ছে ধর্মীয় জঙ্গীবাদ। হিটলার যেমন জার্মান জাতির শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী ছিলেন, ধর্মীয় জঙ্গীবাদীরা তেমনি কোনো একটি বিশেষ ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী। হিটলার জার্মানদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বাকি সকল জাতির বিরুদ্ধে বিশ্বযুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।
ধর্মীয় জঙ্গীবাদীরাও সকল বিধর্মীর বিরুদ্ধে জিহাদ, ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধের আহ্বান জানায়। তাই আমাদের আশেপাশেই আমরা মুসলিম জঙ্গীবাদী, ক্রিশ্চিয়ান জঙ্গীবাদী, হিন্দু জঙ্গীবাদী, ইহুদি জঙ্গীবাদী- এ চার ধরনের ব্যক্তির সাক্ষাৎ পাই। বৌদ্ধধর্মের অনুসারীদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত এরকম কোনো উগ্র জঙ্গী গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমার প্রবন্ধে ইসলামের ধ্বজাধারী ইসলামি জঙ্গীবাদের কথাই আলোচনা করব।

ধর্মীয় জঙ্গীবাদের বিশেষ রূপ : ইসলামি জঙ্গীবাদ

ইসলাম একটি বিশ্বধর্ম। বিশ্বের বিভিন্ন মানবগোষ্ঠী বিভিন্ন রূপে ইসলামকে গ্রহণ ও ব্যাখ্যা করেছেন। ইসলামের একটি অন্যতম ও প্রধান ব্যাখ্যা হচ্ছে ‘শান্তিবাদী’ ব্যাখ্যা। পবিত্র গ্রন্থের উদ্ধৃতি ব্যবহার করেই এ ধারার অনুসারীরা ইসলামকে সৌভাতৃত্ব, শান্তি ও অসাম্প্রদায়িকতার ধর্ম এবং গণতান্ত্রিক ধর্ম হিসাবে দাবি করে থাকেন। তাদের ব্যাখ্যা আক্ষরিকভাবে ধর্মগ্রন্থের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে কিনা এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু এ ধারার অনুসারীরা অন্তত মনে করেন যে, ‘স্পিরিট’ বা মর্মবস্তুর দিক থেকে তাদের প্রদত্ত শান্তিময় ইসলামি ধারার ব্যাখ্যাই সঠিক।
পক্ষান্তরে ইসলামের আরেকটি ধারা ইসলামকে একটি আপোষহীন ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং সর্বগুণের একক আধার হিসেবে বিবেচনা করে। তারা একে শুধু যার যার ব্যক্তিগত বিষয় মনে না করে রাষ্ট্রীয় বিধানে পরিণত করতে চায়। সে জন্য ইসলামপন্থীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করাও জরুরি বলে তাদের ধারণা। এ ধরনের মনোগঠন খুব দ্রুতই জঙ্গীবাদের জন্ম দেয়। সে জন্য আমার বিচারে ‘পলিটিক্যাল ইসলাম’ বা ‘রাজনৈতিক ইসলাম’-ই হচ্ছে সকলপ্রকার জঙ্গীবাদের সক্রিয় আদি রূপ। এ প্রবন্ধে জঙ্গীবাদ বলতে পলিটিক্যাল ইসলামের একটি উগ্র সক্রিয়তাকে বোঝানো হয়েছে।
বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গীবাদ
সে হিসেবে আমাদের দেশে ইসলামি জঙ্গীবাদের আদি উৎসস্থল হচ্ছে বিভিন্ন ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং তাদের শিরোমণি হচ্ছে ‘জামায়াতে ইসলাম’। অনেকেই অবশ্য বলবেন ‘জামায়াতে ইসলাম’, ‘মুসলিম লীগ’, ‘ইসলামী ঐক্যজোট’ ইত্যাদি দল ও জোটগুলো যেহেতু ভোটে অংশগ্রহণ করেন এবং এরা যেহেতু গোপন বা আন্ডারগ্রাউন্ড দল নয়, সেহেতু এদের ‘জঙ্গীবাদী’ বলাটা ঠিক হবে না। আমেরিকান সরকারও এদের জঙ্গীবাদী না বলে ‘মডারেট ইসলামী দল’ হিসেবে চিহ্নিত করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এমনকি গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর স্বীকৃতি প্রদানের প্রেসক্রিপশনও তারা দিয়ে থাকেন।
কেন দ্বিতীয় ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়
১৯৭২ সালে জন্মলগ্নে আমরা যে সংবিধানটি পেয়েছিলাম তাতে ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি-জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র পরস্পর অবিচ্ছেদ্যভাবে একত্রে এসে গিয়েছিল। তখন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের অস্তিত্বও স্বাভাবিকভাবেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বটম লাইন থেকে পেছানোর সুযোগ বাংলাদেশের নেই।
আজকের প্রবন্ধে মূলত আমি যেটি বলার চেষ্টা করেছি তা হচ্ছে তথাকথিত ‘মডারেট’ ইসলাম হচ্ছে ‘এক্সট্রিম’ ইসলামের গোপন পৃষ্ঠপোষক মাত্র। এরা উভয়ই একই ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী মতবাদের দুটি প্রশাখা মাত্র। যে কোনো রেজিমেন্টেড শক্তির মধ্যে যেমন সশস্ত্র শাখা ও নিরস্ত্র শাখা থাকে, তেমনি বিশেষত আমাদের দেশে জামায়াতে ইসলামের রয়েছে এ ধরনের দুটি ধারায় কাজ করার সুদীর্ঘ ঐতিহ্য। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এ দল একই সঙ্গে ‘পিস কমিটি’ ও ‘বদর বাহিনী’ গঠন করেছিল!
এখনও এর একটি ধারা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের তৎপরতায় লিপ্ত থাকে। আর তারই পরিপূরক আরেকটি ধারা গোপন সশস্ত্র জিহাদের প্রস্তুতি ও তৎপরতায় লিপ্ত থাকে। দুটি পরিচালিত হয় সাধারণ একটি কেন্দ্রীয় ভাবাদর্শ ও নেতৃত্ব দ্বারা। দৈনিক ‘প্রথম আলো’র অনুসন্ধানী প্রতিবেদক টিপু সুলতানের বিভিন্ন সময়ের প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং পূর্বসূরী গবেষকদের গবেষণাসমূহে এর প্রচুর দৃষ্টান্ত রয়েছে।
অধ্যাপক আবুল বারাকাতের সাম্প্রতিক গবেষণা ও তথ্যানুসন্ধান থেকে আমার বক্তব্যের সপক্ষে নিম্নোক্ত সত্যগুলো আজ স্পষ্টভাবে বেরিয়ে এসেছে -
ক) রাজনৈতিক ইসলাম ও জঙ্গীবাদ উভয়ের সাধারণ লক্ষ্য হচ্ছে ‘আল্লাহর শাসন’ ও ‘ধর্মীয় শাসনতন্ত্র’ কয়েমের নাম করে ‘রাজনৈতিক ক্ষমতা’ দখল করা। এ জন্য তারা উভয়ে হচ্ছে পলিটিক্যাল ইসলামের দুটি শাখা মাত্র। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি ও দলকে ব্যবহার করে নানা পথ বেয়ে ধীরে ধীরে অবিচলভাবে ওই লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।
খ) রাজনৈতিক ইসলাম গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। কিন্তু তাদের একটি শাখা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কৌশলগত কারণে অংশগ্রহণ করে ততদিন পর্যন্ত যতদিন না তারা উভয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, সম্প্রতি মিশরে ইসলামিক ব্রাদারহুডপন্থী রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছে। অবিলম্বে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিও করছে তারা। আমরা এ-ও জানি যে এ নির্বাচনে তারাই হয়তো জিতবে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় গিয়ে ইসলামি শরীয়াহ আইন ও খিলাফত কায়েম করবে। ভবিষ্যতে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কোনো অধিকার তারা রক্ষা করবে না। অন্য আরও উগ্র জঙ্গীরাও তাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে সরকার গড়ে তুলবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
গ) বাংলাদেশে এ যাবৎ চিহ্নিত জঙ্গী দল, গ্রুপ বা শক্তির সংখ্যা আবুল বারাকাতের হিসেব অনুসারে ১২৫। তাঁর মতে, এদের মধ্যে কোনোটি হয়তো শুধু একটি ইউনিয়নের মধ্যেই কাজ করছে। কোনোটি হয়তো একটি অঞ্চলে কাজ চালায়। কোনোটি সারা দেশে কাজ করে। আবার কোনোটির নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বিস্তৃত রয়েছে।
ঘ) ১২৫ সংগঠনের কোনোটিই পরষ্পর থেকে বিচ্ছিন্ন নয় যদিও আপাতদৃষ্টিতে এদের নাম, কর্মক্ষেত্র ও নেতৃত্বকে পরস্পরের থেকে পৃথক বা ‘ডিসজয়েনড’ বলে মনে হয়। কিন্তু এদের মূল রাখীবন্ধনের ক্ষেত্রটি হচ্ছে ইসলাম কায়েমের জন্য ‘রাজনৈতিক ক্ষমতা’ দখলের এবং রাষ্ট্রের ইসলামিকরণের অভিন্ন লক্ষ্য।
ঙ) ড. আবুল বারাকাতের মতে, এদের সকলের গুরু হচ্ছে প্রধান ইসলামি রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলাম। এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এ দেশে কৌশলের দিক থেকে সবচেয়ে মেধাবী ও প্র্যাগমেটিক ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল এটি। এখন পর্যন্ত সুকৌশলে ইসলাম, আমেরিকা, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সকলের কাছেই দলটি নিজেকে গ্রহণযোগ্য রাখতে সক্ষম হয়েছে।
চ) জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের ইসলামি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে মোট তিন ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে কাজ চালাচ্ছে। প্রথম ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি জামায়াতে ইসলামের অঙ্গ গণসংগঠন (যেমন- ইসলামী কৃষক দল, শ্রমিক দল, যুবক দল, ছাত্র শিবির, নারী দল ইত্যাদি)। এদের পরিচয় উন্মুক্ত। দ্বিতীয় ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো জামায়াতে ইসলামের মিত্র অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিদ্যমান। যেমন- এনজিও, নানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী হাসপাতাল, পরিবহণ প্রতিষ্ঠান, দোকান, ডিপার্টমেন্ট স্টোর, সমবায়, রিয়াল এস্টেট, আদম ব্যবসায় ইত্যাদি।
আয়বর্ধক এসব বাণিজ্যিক ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানই জামায়াতে ইসলামের প্রধান আর্থিক পৃষ্ঠপোষক। এখান থেকেই নিয়মিত কোটি কোটি টাকা তাদের রাজনৈতিক ফান্ডে জমা হয়। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিজেদের সার্বক্ষণিক কর্মীদের পরিপোষণ ছাড়াও সে ফান্ড ব্যবহার করে তাদের সমগ্র ইসলামি নেটওয়ার্কের কাজকর্ম পরিচালনা করেন। এ ছাড়াও সর্বশেষে গোপন নেটওয়ার্কে রয়েছে বেআইনি গোপন ইসলামি জঙ্গী সংগঠনসমূহ। এদের সঙ্গেও জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বের রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।
তবে জঙ্গীদের চরমপন্থা ও গণতন্ত্রের নরম পন্থার মধ্যে উদ্দেশ্য হাসিলের সঠিক পথ কোনটি তা নিয়ে যে নানা বিতর্ক রয়েছে বা এক ধরনের ‘অবৈরিতামূলক দ্বন্দ্ব’ রয়েছে, তা দুই পার্টনারের কর্মীদের মধ্যেও বিদ্যমান। নেতারা অবশ্য প্র্যাগমেটিক। দুটি রাস্তাই তারা খোলা রাখতে পছন্দ করেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মৌলিক ভ্রান্তি হচ্ছে অবৈরিতামূলক এ দ্বন্দ্বকে তারা ‘বৈরিতামূলক দ্বন্দ্ব’ বলে ভাবছেন অথবা একেই কাজে লাগিয়ে অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা কয়েমের স্বপ্ন দেখছেন।
কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতায় জামায়াতকে আঘাত না করে বা রাজনৈতিক ইসলামকে পর্যুদস্ত না করে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েমের স্বপ্ন সুদূরপরাহতই থেকে যাবে। কারণ জামায়াতই হচ্ছে রাজনৈতিক ইসলামের কেন্দ্রীয় সংগঠন।
আর সে জন্য শুধু দু-চার জন জামায়াত নেতাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করে শাস্তি দেওয়াটা মোটেই যথেষ্ট হবে না। সমাজে রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের যে শেকড় বিস্তৃত রয়েছে তার আমূল উৎপাটন ছাড়া ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
ছ) জামায়াতে ইসলামের সবচেয়ে বড় শক্তির দিক হচ্ছে ঐতিহ্য, গঠন, কর্মপ্রণালী, মর্মবস্তু এবং স্পিরিটের দিক থেকে এরা ফ্যাসিবাদী হওয়া সত্ত্বেও ব্যবহারিক রাজনীতিতে নিজেদের একটি গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এটা প্রথম তারা গড়ে তোলে এরশাদবিরোধী ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামিল হয়ে। পরবর্তীতে বিএনপির সঙ্গে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং আওয়ামী লীগের পরোক্ষ প্রশ্রয়ের সুযোগ নিয়ে তারা নিজেদের বিকশিত করে জাতে ওঠাতে সক্ষম হন। বর্তমানে তাদের এতই বাড়-বাড়ন্ত যে এক সময় যে তারা কৃত অপরাধের দরুণ বেআইনি ঘোষিত হয়েছিল, জনসমর্থনহীন খুনীদের সংগঠনে পরিণত হয়েছিল, তাদের মূল নেতা যে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিলেন সেসব কথা সবাই এখন ভুলতে বসেছেন। জামায়াত অবশ্য আজ পর্যন্ত এ জন্য ক্ষমা চায়নি।
জ) জামায়াতে ইসলামের রাজনৈতিক কৌশলও হচ্ছে খুবই প্রয়োগবাদী। মৃতপ্রায় অবস্থা থেকে বহুগুণ শক্তি অর্জন করে তারা আজ উঠে দাঁড়িয়েছে এ কৌশলের জোরে। ‘ইসলামে নারী নেতৃত্ব নেই, কিন্তু তারা খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিয়ে ইসলাম ত্যাগ করেছেন’ এরকম অভিযোগ যখন অপরাপর গোঁড়া ইসলামপন্থী দলগুলো তাদের বিরুদ্ধে উঠাল তখন তারা অনায়াসেই ফতোয়া দিল যে ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে এটা করা যেতে পারে। একসময় তারা জেএমবির পৃষ্ঠপোষকতা করলেও যখন তাদের নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হল- তখন তারা টুঁ শব্দটি করল না। এ দেশে জামায়াতই প্রথম উপলব্ধি করে যে রাজনীতিতে সম্মুখসমরে না গিয়ে তলে তলে ‘রাষ্ট্রের মধ্যে রাষ্ট্র’, ‘অর্থনীতির মধ্যে অর্থনীতি’ এবং ‘সমাজের মধ্যে সমাজ’ গড়ে তুলতে হবে।
বিখ্যাত মার্কসিস্ট পণ্ডিত গ্রামসি তাঁর গ্রন্থে ‘ট্রেঞ্চ ওয়ার’-এর কৌশলের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে বিপ্লব করে ক্ষমতাদখলের আগে অর্থনীতি ও সমাজে এক ধরনের পরিচালক অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। শুধু বলপ্রয়োগের মাধ্যমে পরবর্তীতে ক্ষমতা সংরক্ষণ সম্ভব হবে না, গ্রামসির ভাষায় যাকে বলা হয় সম্মতিভিত্তিক আধিপত্য বা হেজিমোনি প্রতিষ্ঠার লড়াই, সে তত্ত্বকেই অত্যন্ত সার্থকভাবে বাংলাদেশে প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
মজার ব্যাপার হচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশে বামপন্থীদের সৃজনশীল কৌশলগুলোই আরও সার্থকভাবে প্রয়োগ করছে রাজনৈতিক ইসলামের এ মূল নেতৃত্ব। নিজেদের রাজনৈতিক ইসলামের বৈশিষ্ট্যটি গোপন রেখে এক ধরনের সিভিল সোসাইটিভিত্তিক ইসলামি প্রভাববলয়ও তারা গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছে। ইসলামের যে উৎসব, প্রতীক, শ্লোগান, আচার-অনুষ্ঠান, উপাসনারীতি, যেগুলো নন-পলিটিক্যাল ইসলাম বা জনসাধারণের স্বাভাবিক চিরায়ত ঐতিহ্য সেগুলোর মধ্যেই ধীরে ধীরে পলিটিক্যাল ইসলামের বীজবপনের ধৈর্যশীল কাজটি তারা করে চলেছে নিরন্তর।
প্রশ্ন হচ্ছে এ কৌশলী ধারা রোখার উপায় কী? প্রথমত, আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে যে আমরা লড়াই করছি এমন এক শত্রুর বিরুদ্ধে যার রয়েছে দশটি মুখ। তার একটি মুখ বন্ধ করে বা একটি ডাল কেটে তাকে পরাস্ত করা যাবে না। এ জন্য সর্বপ্রথম দরকার মূলের দিকে দৃষ্টিপাত করা। পলিটিক্যাল ইসলামের অর্থনৈতিক ভিত্তিটি চিহ্নিত করা এবং সেটিকে পলিটিক্যাল ইসলাম থেকে বিযুক্ত করা দরকার। তাহলেই পলিটিক্যাল ইসলামের আর্থিক উৎসগুলো থেকে অর্থের সঞ্জিবনী প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে এবং আপনা থেকেই তাদের তৎপরতা শুকিয়ে যাবে।
তখন পলিটিক্যাল ইসলামের সিভিলিয়ান ফোর্সটিও ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। সামাজিক ছত্রছায়ার অভাবে জঙ্গী ইসলামও শক্তিহীন ও আশ্রয়হীন হবে। জঙ্গীরা আদর্শহীন কতিপয় দৃষ্কৃতকারীতে পরিণত হবে। ফলে তাদের দমন করাও তখন সহজতর। অবশ্য মার্কিনীরা নিজেদের স্বার্থে কৃত্রিমভাবে ‘মডারেট ইসলাম’ নাম দিয়ে মৌলবাদকে আরও কিছুদিন জিইয়ে রাখবে বলে মনে হয়।
এজন্যই আজকে ‘জঙ্গীবাদের অর্থের উৎস’ খুঁজে বার করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সামাজিক রাজনৈতিক কর্তব্য।
জঙ্গীবাদের অর্থের উৎস
নানাভাবে পলিটিক্যাল ইসলাম অর্থসংগ্রহ করে থাকে। তাদের অর্থের প্রধান উৎসগুলো নিম্নরূপ:
ক) আয়বর্ধক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা।
খ) পেট্রোডলার, প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ এবং মিত্ররাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা প্রদত্ত অর্থ।
গ) দলীয় সদস্যদের চাঁদা/ লেভী।
ঘ) ধর্মবিশ্বাসী মুসলমানদের দান/ খয়রাত/ জাকাত।
ঙ) জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিও-র ফান্ড।
চ) রাষ্ট্রের যেসব অ্যালোকেশন আছে তাকে সুকৌশলে ইসলামি সংগঠনের দিকে পরিচালিত করা ইত্যাদি।
এ সমস্ত উৎস থেকে অর্থ সরবরাহের পূর্বশর্ত হচ্ছে এসব জায়গায় বিশ্বাসী ক্যাডারদের অবস্থিতি। গোপনে গোপনে কাজটি সবচেয়ে সাফল্যের সঙ্গে করতে সক্ষম হয়েছে যে দলটি সেটি হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।
ড. আবুল বারাকাতের হিসেব অনুসারে এ দলটির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান নিট বার্ষিক মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। বর্তমান জাতীয় উন্নয়ন বাজেটের প্রায় চার শতাংশ। ড. আবুল বারাকাতের অনুমান হচ্ছে এর তেত্রিশ শতাংশ তারা রাজনৈতিক ভাবাদর্শ নির্মাণের কাজে ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রতিবছর এর নানাবিধ তৎপরতা পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে সুপরিকল্পিতভাবে ব্যয়িত হচ্ছে ৫৭৭ কোটি টাকা।
আমরা যদি আরও ধরে নিই যে এসব ইসলামিক উদ্যোগে নিয়োজিত অর্থের অর্ধেক ব্যয় হয় মানবিক শ্রমের পেছনে এবং অর্ধেক বস্তুগত ব্যয়ে, তাহলে ইসলামি ক্যাডারদের বেতনভাতা বাবদ বার্ষিক ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রতিবছর প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা। এ কথাও আমরা জানি বর্তমানে বামপন্থী ক্যাডাররা যারা সার্বক্ষণিক হিসেবে কাজ করছেন তাদের ভাতা সাধারণত সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকার মধ্যেই ওঠানামা করে থাকে। সে টাকাও যোগাড় করতে বামপন্থী দলগুলো বর্তমানে হিমসিম খেয়ে যায়।
ফলে সারা দেশে তাদের দলীয় সার্বক্ষণিক ক্যাডারের সংখ্যা ১ হাজারের বেশি হওয়াটাই কঠিন হয়ে পড়ে। তাদের গড় ভাতা মাসিক ৫ হাজার টাকা ধরলে সে জন্যও বছরে তাদের বহুকষ্টে জোগাড় করতে হবে প্রায় ৬ কোটি টাকা। সেটির বড় অংশই আবার তুলতে হবে গণসংগ্রহের মাধ্যমে। ফলে এটা অনিশ্চিতও বটে।
সে তুলনায় দেখুন পলিটিক্যাল ইসলাম যদি প্রত্যেক ক্যাডারকে গড়ে মাসে ১০ হাজার টাকা করেও দেয় অর্থাৎ বছরে একজনকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করেও দেয়, তাহলেও তাদের যে মুনাফালব্ধ আয় আছে তার এক তৃতীয়াংশ ব্যবহার করেই তারা অনায়াসে প্রায় ২৪ হাজার ক্যাডারকে সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে পালন করতে সক্ষম হবে। আর মাসিক ৫ হাজার টাকা ভাতা ধরলে সে সংখ্যা হবে দ্বিগুণ অর্থাৎ আটচল্লিশ হাজার। আর এসব আয়বর্ধক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাধারণ কর্মচারীদের মোট সংখ্যা এর সঙ্গে যুক্ত হলে পলিটিক্যাল ইসলামের সার্বক্ষণিক নেটওয়ার্কের মধ্যে থাকা লোকের সর্বনিম্ন সংখ্যা ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখে দাঁড়িয়ে যাবে।
এ সংগঠিত শক্তিটি তাই মোটেই অবহেলার যোগ্য নয়। এটি একটি আদর্শভিত্তিক রেজিমেন্টেড শক্তিও বটে। আর্থিক শক্তি যখন ফ্যাসিস্ট আদর্শের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আমাদের দেশে সেটাই হয়েছে।
ড. আবুল বারাকাত আরও দেখিয়েছেন যে আমাদের সাধারণ অর্থনীতি যে জায়গায় ৫ থেকে ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সে জায়গায় এই পলিটিক্যাল ইসলামের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ১০ থেকে ১২ শতাংশ। তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আরও বৃদ্ধি পেল। এতে বোঝা যাচ্ছে যে যত দিন যাবে ততই সমগ্র সিভিল সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোর চৌহদ্দিতে পলিটিক্যাল ইসলাম প্রভাবিত সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের অনুপাত বা ঘনত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সুতরাং তারা একটি অপ্রতিরোধ্য প্রাধান্য অর্জনের আগেই তাদের আঘাত করার কর্তব্যটি আমাদের সামনে আজ উপস্থিত হয়েছে।

উপসংহার
শুধু অর্থপ্রবাহ বন্ধ করে পলিটিক্যাল ইসলামকে পরাজিত করা যে সম্ভব হবে না সেটাও আমাদের স্বীকার করতে হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে আমরা একমুখী শিক্ষা এবং শিক্ষার নিম্ন থেকে উচ্চস্তর পর্যন্ত একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করতে পারিনি। বিশেষ করে ‘কওমি মাদ্রাসায়’ কী পড়ানো হয়, তাদের সংখ্যা কত, এটাই এখন পর্যন্ত আমাদের জ্ঞানের বাইরে রয়ে গেছে।
ড. বারাকাতের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে আমাদের প্রতি ৩ জন ছাত্রের ১ জন হচ্ছে মাদ্রাসার। শিক্ষকের ক্ষেত্রেও এ একই অনুপাত বজায় রয়েছে। এ ছাত্র ও শিক্ষকদের অধিকাংশই আবার দরিদ্র ও ধর্মপরায়ণ। পলিটিক্যাল ইসলামের অন্যতম রণকৌশল ছিল মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে উৎসাহিত করা। আর এখান থেকেই জন্ম নিয়েছে অসংখ্য হতাশ বেকার যুবক যারা পরবর্তীতে জঙ্গীবাদের খাতায় নাম লিখিয়েছে এবং আফগানিস্তানে গিয়ে তালেবান যোদ্ধায় পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, প্রক্রিয়াটি সবচেয়ে ভালোভাবে সংঘটিত হয়েছিল এবং হচ্ছে পাকিস্তানে। আফগানিস্তানকে সোভিয়েতের হাত থেকে মুক্ত করার অজুহাতে আমেরিকা আশির দশকে প্রত্যক্ষভাবে মাদ্রাসার প্রসারকে বস্তুগত ও আদর্শগতভাবে মদদ্ দিয়েছিল। [ দেখুন, The Big Wedding`9/11, The Whistle Blowers and the Cover Up’, sander Hicks, USA, 2006.]
সে সময় বাংলাদেশেও ব্যাঙের ছাতার মতো মাদ্রাসাগুলো গজিয়ে উঠেছিল। আজ তারাই দু দেশে পরিণত হয়েছে জঙ্গীবাদের সবচেয়ে উর্বর প্রজনন ক্ষেত্রে। বর্তমান সরকার বহুবছর পর অন্তত আলিয়া মাদ্রাসাগুলোতে আধুনিক পাঠ্যসূচি প্রবর্তন অংশত বাধ্যতামূলক করেছেন। কিন্তু কওমী মাদ্রাসাগুলো আজও রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
যে করে হোক মূলধারার শিক্ষায় ক্রমে ক্রমে সকল শিশুকে নিয়ে আসতে হবে। এ শিক্ষাকে হতে হবে আধুনিক, কর্মমুখী ও মানবিক। বিদ্যমান মাদ্রাসাগুলোকে (কওমীসহ) অতঃপর ওই জাতীয় পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষাসমূহের অধীনে না আনতে পারলে পলিটিক্যাল ইসলামকে ঠেকানো কঠিন হবে।
এটা করতে না পারলে একদিকে আমরা জঙ্গী নির্মূল করব, আবার অন্যদিকে নতুন জঙ্গীরা পয়দা হতে থাকবে। তাই শিক্ষাবিপ্লব জঙ্গীবাদ দমনের সবচেয়ে সফল ও দীর্ঘমেয়াদী হাতিয়ার।

এম এম আকাশ : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

লিংক

No comments:

Post a Comment