Sunday, October 10, 2010

জনগণকে সংগঠিত হতে হবে

লোককথা
ফ র হা দ ম জ হা র

ফ্যাসিজম ও সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে গত দুই কিস্তিতে আলোচনা শুরু করেছিলাম, গত হপ্তায় শারীরিক অসুস্খতার জন্য শেষ করতে পারি নি। সেই জন্য পাঠকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
শুরুতেই পাঠককে সাবধান করতে চাই যে গালি-গালাজের শব্দ হিশাবে আমি ‘ফ্যাসিজম’ শব্দটি ব্যবহার করি নি। কিম্বা বামপন্থি অভ্যাসবশত ‘সাম্রাজ্যবাদ’ কথাটিও আমি ব্যবহার করছি না। শব্দগুলো দিয়ে যে ধারণা প্রকাশ পায় তা বাংলাদেশের রাজনীতি বুঝতে এবং আমাদের কর্তব্য নির্ধারণ করতে কতোটুকু কাজে লাগে সেই দিকেই আমাদের মনোযোগ নিবদ্ধ রাখতে চাই।
পত্রিকার কলাম গুরুগম্ভীর তত্ত্ব আলোচনার জায়গা নয়। এখানে কিছুটা সেই অপরাধ করব। আমার বিনীত দাবি হচ্ছে ফ্যাসিজম ও সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা ছাড়া এবং বাংলাদেশে কিভাবে ফ্যাসিজমের উপাদান ও প্রবণতা হাজির রয়েছে সেই বিষয়ে ঘনিষ্ঠ মনোযোগ ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের পক্ষের রাজনীতি আমরা গড়ে তুলতে পারব না।
এই কথাও পাঠককে মনে রাখতে বলি কোন একটি বিশেষ দলকে ‘ফ্যাসিবাদী’ বলে নিন্দা করে আনন্দ উপভোগ করবার অবসরও আমাদের নাই। কোন্ দলের মধ্যে ফ্যাসিবাদী প্রবণতা নাই? এটা ঠিক যে আমাদের বাকশালী আমলের সুনির্দিষ্ট কিছু অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বাকশালী আমলকে ফ্যাসিবাদী আমল হিশাবে নিন্দা করা হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রুদ্ধ করা, একদলীয় শাসন কায়েম ইত্যাদি নানান রাজনৈতিক নির্যাতন ও নিবর্তনমূলক শাসনের কারণে বাকশালী আমল ফ্যাসিবাদী আমল বলে গণ্য হয়। কিন্তু এটাতো আসলে একনায়কতান্ত্রিক সরকারেরও লক্ষণন্ধ ফ্যাসিবাদের শুধু নয়। ফ্যাসিবাদের চরিত্র লক্ষণ কী? একটি চরিত্র লক্ষণ হচ্ছে, এর আগেও আমরা বলেছি, গণসমর্থন। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যে বিপুল গণসমর্থন থাকে বা তৈরি হয় সেটা বাকশাল তৈরি করতে পারে নি, কিন্তু স্বাধীনতার পর জাতীয়তাবাদী উগ্রতা, গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করবার আগে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের রণধ্বনি ইত্যাদির মধ্যেই ফ্যাসিবাদের ভিত্তি তৈরি হয়। তার বীজ তো আমরা এখনো বহন করে চলেছি। ইউরোপে হিটলার ও মুসোলিনির পক্ষে যে গণসমর্থন দেখা গিয়েছিল, বাকশালের পক্ষে কি সেই গণসমর্থন ছিল? মুক্তিযুদ্ধের পরে সামগ্রিক ভাবে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে বাকশাল থেকে আলাদা করব কিভাবে? বরং বাকশাল ছিল ফ্যাসিবাদের প্রতি জনগণের মোহভঙ্গের সময়। বাকশালী আমলে ফ্যাসিবাদী প্রবণতা তথাকথিত পার্লামেন্টারি জোব্বা খসিয়ে দিয়ে একনায়কতান্ত্রিক ক্ষমতার রূপ পরিগ্রহণ করেছিল। ফলে জনগণের মোহভঙ্গ ঘটতে অসুবিধা হয় নি। কিন্তু ফ্যাসিবাদ পরাস্ত হয়েছে বলা যাবে না। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ একনায়কতান্ত্রিক ক্ষমতা পরিগঠনের মধ্যে শুধু নয়, ছিল নৃতাত্ত্বিক বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধারণায়, তথাকথিত ‘সমাজতন্ত্রে’ এবং নিরন্তর এক যুদ্ধংদেহি মনোভঙ্গির চর্চায়। ফ্যাসিবাদ মজুদ ছিল আমাদের সেই সকল ধ্যান, ধারণা, আকাáক্ষা ও আবেগের মধ্যে যাকে আমরা কোন দিনই সন্দেহ করি নি, সন্দেহ করতে শিখি নি।
যুদ্ধংদেহি মনোভাবের কথা বলছি কেন? অস্ত্রের প্রতি আমাদের আবেগ প্রবল। যার অতলে মুক্তিযুদ্ধের গৌরব ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র অবশ্যই দরকার, কিন্তু সেটা গৌণ দিক, বরং একটি নির্যাতিত জনগোষ্ঠির প্রতি বে-ইনসাফি এবং নির্যাতিতের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ইত্যাদি রাজনৈতিক প্রশ্নই ছিল মুখ্য। রাজনৈতিক ভাবে তার সমাধান হয় নি বলেই সশস্ত্র সংগ্রামের প্রয়োজন ছিল। নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে নির্যাতিতের লড়াইয়ের যে নৈতিক শক্তি তা অস্ত্র, বারুদ, কামান গোলার চেয়েও শক্তিশালী। একটি জনগোষ্ঠি শুধু অস্ত্র দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ভাবে পরিগঠন করে না; চিন্তা, চেতনা, জ্ঞান, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ইত্যাদি নানান কিছুর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠি দাঁড়াতে পারে না। কিন্তু ফ্যাসিবাদ আমাদের মধ্যে বাসা বেঁধে আছে বলে আমরা ফাঁপা আবেগ আর ফাঁপা আদর্শের মধ্যে ধরা পড়ে আছি। মুক্তিযুদ্ধ এখনো আমাদের অধিকাংশের কাছে দুই নৃতাত্ত্বিক সম্প্রদায় ‘বাঙালি’ বনাম ‘পাঞ্জাবি’র লড়াই। তাই না?
নৃতাত্ত্বিক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের দাবি হিটলারের বিশুদ্ধ ‘জাতি’র ধারণা থেকে আলাদা কিছু নয়। আমরা যখন ‘জাতি’ হিশাবে নিজেদের ‘আমরা’ বলে পরিচয় দিয়ে থাকি কতো মাত্রায় সেই ‘জাতি’ ধারণার মধ্যে নৃতত্ত্ব বা বায়লজি ভর করে সেই বিষয়ে আমরা নিজেরাও কি সচেতন? মোটেও না। ফ্যাসিবাদের অতি প্রাথমিক উপাদান বা উর্বর ক্ষেত্র এইসব। যখন ‘আবহমান বাঙালি জাতি’ বলি তখন কি প্রাকৃতিক বিবর্তনের অনিবার্য ফল হিশাবে নিজেদের প্রজ্ঞাপন করি না আমরা? আমাদের অধিকাংশের ধারণা ‘জাতি’ ইতিহাসের আগে বা বাইরে প্রাকৃতিক বিবর্তনের প্রক্রিয়া দ্বারা নির্ণীত, ইতিহাস দিয়ে নয়। এই ধরণের অনৈতিহাসিক ধোঁয়াশা নিয়ে কোন জনগোষ্ঠিই ‘রাজনৈতিক’ হয়ে উঠতে পারে না।
রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবে লেনিনের সহযোগী লিও ট্রটস্কির বরাত দিয়ে কিছু কথা বলি। সেই ১৯৩০ সালে লেখা ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে ট্রটস্কির যে বই এখনো ক্লাসিক হয়ে আছে সেখান থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি।
'ডপ শৎঢ়য় ষসয় মনপষয়মফী াথড় নমধয়থয়সড়ঢ়ভমহ- য়ভপ নমধয়থয়সড়ঢ়ভমহ সফ য়ভপ শমলময়থড়ী শথধভমষপ, সফ য়ভপ ঢ়য়থফফ, সফ ফমষথষধপ ধথহময়থল- াময়ভ থ ফথঢ়ধমঢ়য় নমধয়থয়সড়ঢ়ভমহ. ঋসড় য়ভপ লথয়পড়, য়ভপড়প মঢ় ফমড়ঢ়য় ষপধপঢ়ঢ়থড়ী থ ফপপলমষব সফ নপঢ়হপড়থয়মসষ সফ লথড়বপ শথঢ়ঢ়পঢ় সফ হপসহলপ. ডভপষ ড়পংসলৎয়মসষথড়ী হথড়য়মপঢ় দপয়থড়ী য়ভপশ, াভপষ য়ভপ ংথষবৎথড়ন সফ য়ভপ াসড়রপড়ঢ় ঢ়ভসাঢ় ময়ঢ় মষধথহথধময়ী য়স লপথন য়ভপ হপসহলপ য়স ংমধয়সড়ী- য়ভপষ য়ভপ ফথড়শপড়ঢ়, য়ভপ ঢ়শথলল দৎঢ়মষপঢ়ঢ় শপষ, য়ভপ ৎষপশহলসীপন, য়ভপ ঢ়সলনমপড়ঢ়, পয়ধ., দপধসশপ ধথহথদলপ সফ ঢ়ৎহহসড়য়মষব থ ফথঢ়ধমঢ়য় শসংপশপষয়, দৎয় সষলী য়ভপষ.'
যুদ্ধকালীন বা সামরিক একনায়কতন্ত্রকে ফ্যাসিবাদ হিশাবে চিহ্নিত করা ঠিক না। বিপ্লবী রাজনৈতিক দলগুলো যখন জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করে, নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়, তখনই বেপরোয়া হয়ে গিয়ে কৃষক, শ্রমিক, সৈনিক, বেকার জনগণ ফ্যাসিস্ট রাজনীতির প্রতি ঝুঁকে পড়ে। ফ্যাসিবাদকে শুধু আওয়ামী লীগের খাসিলত বললে চলবে না, ষাট দশক থেকে আজ অবধি রাজনীতিতে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক ধারার ব্যর্থতা হিশাবে না বুঝলে ফ্যাসিবাদের কিছুই বোঝা হবে না। আগামি দিনে নিজেদের রাজনৈতিক কর্তব্য নির্ধারণও অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ট্রটস্কি আরো বলেছেন, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রের ধরণ দিয়ে চেনা যায় না; রাষ্ট্রের ধরণ নয়, বরং রাষ্ট্র কী ভূমিকা পালন করে সেখানেই ফ্যাসিবাদকে চেনা যায়। যেমন, শ্রমিক শ্রেণীর দল ও সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করা। বাংলাদেশে তাদের দুই ভাবে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। প্রথমত, রক্ষী বাহিনী দিয়ে, হত্যা করে। দ্বিতীয়ত, গণতান্ত্রিক বিপ্লবের বিপরীতে সমাজতন্ত্রের রণধ্বনি দিয়ে। বাকশালী আমলে ষাট দশক থেকে শুরু করে পুরা সত্তর দশক অবধি শ্রমিক শ্রেণী বা খেটে খাওয়া শ্রেণীর রাজনীতি যাঁরা করতেন তাঁরা চেয়েছিলেন গণতান্ত্রিক বিপ্লব। সমাজতান্ত্রিক রূপান্তর তাঁরা অবশ্যই চেয়েছিলেন, কিন্তু সেটা চেয়েছিলেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে। সেই রাজনীতিকে নস্যাৎ করবার জন্যই গণতান্ত্রিক বিপ্লবের বিপরীতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জজবা উঠেছিল, তার পক্ষে জনমতও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। অতএব বাংলাদেশের সংবিধানেও ‘সমাজতন্ত্র’ অনায়াসে ঠাঁই পেয়েছিল। একে আমরা ইতিবাচক হিশাবেই দেখতেই অভ্যস্ত। অস্বস্তিকর হলেও বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদকে বুঝতে হলে একে ফ্যাসিবাদী চিহ্ন হিশাবেই গণ্য করতে হবে, কোন বামপন্থি ধারা হিশাবে নয়। বিপ্লবের স্তর গণতান্ত্রিক নাকি সমাজতান্ত্রিকন্ধ বামপন্থিদের সেই পুরানা তর্ক ফ্যাসিবাদ বোঝার জন্য এই ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।
ট্রটস্কি বলছেন, ঋথঢ়ধমঢ়শ মঢ় ষসয় ঢ়মশহলী থ ষপা ঢ়য়থবপ মষ য়ভপ হড়সধপঢ়ঢ় দী াভমধভ য়ভপ পপিধৎয়মংপ সফ য়ভপ দসৎড়বপসমঢ় ঢ়য়থয়প দপধসশপঢ় ঢ়য়ড়সষবপড় থষন শসড়প মষনপহপষনপষয়. ওয় মঢ় ষসয় ঢ়মশহলী `য়ভপ সহপষ নমধয়থয়সড়ঢ়ভমহ সফ ধথহময়থল'. ওয় মঢ় থ ঢ়হপধমথল ফসড়শ সফ 'ঢ়য়ড়সষব পপিধৎয়মংপ' থষন সফ য়ভপ 'সহপষ নমধয়থয়সড়ঢ়ভমহ' াভমধভ মঢ় ধভথড়থধয়পড়মঢ়পন দী য়ভপ ধসশহলপয়প নপঢ়য়ড়ৎধয়মসষ সফ থলল াসড়রপড়ঢ় সড়বথষমঢ়থয়মসষঢ়- পংপষ য়ভপ শসঢ়য় শসনপড়থয়প সষপঢ়... ময় মঢ় য়ভপ থয়য়পশহয় য়স ংমসলপষয়লী হড়পংপষয় থষী ফসড়শ সফ সড়বথষমঢ়পন াসড়রপড়ঢ় ঢ়পলফ-নপফপষঢ়প, দী ধসশহলপয়পলী থয়সশম্মষব য়ভপ াসড়রপড়ঢ়.
মেহনতি মানুষের প্রতিটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফ্যাসিবাদ। বাংলাদেশে যদি আমরা দেখি আমরা কি মেহনতি শ্রেণীর কোন সংগঠন দেখি এখন? ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে, কিন্তু কৃষক, শ্রমিক বা খেটে খাওয়া মানুষ পুঁজির হাত থেকে নিজেদের প্রতিরক্ষা করতে পারে সেই ধরণের সংগঠন কই? তাদের এক এক করে ধ্বংস করা হয়েছে।
আরেক ফরাসি মার্কসবাদী তাত্ত্বিক নিকো পোলাঁজা (ঘমধসঢ় চসৎলথষয়্থঢ়) বলেছেন, যদি আমরা সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে কোন আলোচনা করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের ফ্যাসিবাদ নিয়ে কথা বলতে হবে। এক দিক থেকে যাকে আমরা ‘আধুনিকতা’ বলি, যে আধুনিকতার অন্তরশক্তি হচ্ছে পুঁজির পুঞ্জীভবন এবং তার পুনরুৎপাদন, সেই আধুনিক সমাজ সংক্রান্ত আলোচনা ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে আলোচনা না করে করা যায় না। যে ঐতিহাসিক বাস্তবতা সাম্রাজ্যবাদ বা আধুনিকতার শর্ত, ফ্যাসিবাদ গড়ে ওঠার শর্তও একই। যদি খানিকটা সরলীকরণ করে বলি তাহলে বলা যায় মেহনতি শ্রেণী বা জনগণ যদি দুনিয়াব্যাপী পুঁজির পুঞ্জীভবন ও আত্মস্ফীতিন্ধ অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদের বিপরীতে নিজেদের প্রতিরক্ষা করবার জন্য প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক শক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান গড়তে ব্যর্থ হয় তাহলে ফ্যাসিবাদ সেখানে গেড়ে বসে। কিম্বা আরো সহজে বলা যায় পুঁজির বিরুদ্ধে জনগণের রাজনৈতিক, সাংগঠনিক, সাংস্কৃতিক বা যে কোন ধরণের প্রতিরোধের অনুপস্খিতিই মূলত ফ্যাসিজম। বাংলাদেশে আমরা এই অসহায় অবস্খার মধ্যে পড়েছি।
ইউরোপে দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে যে ফ্যাসিবাদ গড়ে উঠেছে তার সঙ্গে আমাদের দেশের এখনকার ফ্যাসিবাদের ফারাক এখানে। ফ্যাসিবাদকে শুধু জাতীয় রাষ্ট্রের মধ্যে বা বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলের মধ্যে দেখলে চলছে না। বরং বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্খা এবং বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সংস্খা রাষ্ট্রকে ভেঙেছে এবং ক্রমাগত এমন ভাবে ভাঙছে যে, বহুজাতিক কোম্পানির লুণ্ঠন, মুনাফাখোরি ও মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করবার বিরুদ্ধে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবার কোন সংগঠন, বা প্রতিষ্ঠান জনগণের হাতে আর নাই। নিজেদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করবার যে কোন লড়াই-সংগ্রামকে এখন অনায়াসেই ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ড হিশাবে আখ্যায়িত করা সহজ। আমরা তো চোখের সামনেই দেখছি আদালত মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করছে না। যে অসহায় ও বিপন্ন অবস্খার মধ্যে নাগরিকরা পড়েছে এই পরিস্খিতি থেকে সহজে উদ্ধার পাওয়া সহজ নয়।
জনগণকে নতুন ভাবে নিজেদের সংগঠিত করবার কথা ভাবতে হবে। বিদ্যমান অবস্খা থেকে নিস্তারের শর্টকাট কোন পথ নাই।
৫ জুন ২০০৯। ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৬। শ্যামলী।
ইমেইল : ফথড়ভথনশথ্ভথড়@ভসয়শথমল.ধসশ

1 comment:

  1. অগ্রবীজের সাম্প্রতিক সংখ্যাতে আপনার সাক্ষাতকার পড়ে আপনার সম্পর্কে আগ্রহ বেড়ে গেছে, হয়তো এক আধটু ভক্তও হয়ে গেছি। আরো আরো পড়তে ও জানতে আগ্রহী হয়ে উঠেছি।

    ReplyDelete